গর্ভাবস্থায় যে কাজ করা ঠিক নয়

স্বাস্থ্য: বেশ কিছু কাজ আছে যা আমরা অন্য সময় অনায়াসে করতে পারলেও গর্ভাবস্থায় তা করা মোটেও ঠিক নয়। কারণ সেই সময় এই কাজগুলি করলে গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা ৯০% থাকে। তাই দেখে নিন গর্ভাবস্থায় কী কী কাজ করবেন না।

ভুমিকা

গর্ভাবস্থা হল প্রত্যাশা এবং উত্তেজনায় ভরা একটি অলৌকিক যাত্রা। যাইহোক, একটি স্বাস্থ্যকর ফলাফল নিশ্চিত করার জন্য সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। এই নিবন্ধে, আমরা গর্ভাবস্থার বিভিন্ন দিক অন্বেষণ করব, সাধারণ পৌরাণিক কাহিনী গুলিকে উড়িয়ে দেব এবং এই সূক্ষ্ম সময়ের মধ্যে কেন কিছু ক্রিয়াকলাপ উপযুক্ত নয় তার উপর আলোকপাত করব।

গর্ভবস্থার ৭ম মাসে শিশু শুনতে ও লাফতে পারে
গর্ভবস্থার ৭ম মাসে শিশু শুনতে ও লাফতে পারে

গর্ভাবস্থায় যে কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন

সাহায্য_বিডি’র স্বাস্থ্য ডেস্ক: “গর্ভাবস্থায়” একজন নারির জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় সুস্থ থাকতে অনেক কিছু করার ওপরে বিধিনিষেধও রয়েছে। গর্ভবতী মহিলাদের ড্রাগ এবং অ্যালকোহল বা নেশা থেকে যেমন দূরে থাকতে বলা হয়, তেমনই আরও অনেক বিধিনিষেধ এই সময় মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয় গর্ভবতী নারীদের।

যাদের গর্ভাবস্থায় বিশেষ কোনও জটিলতা থাকে না, তাঁদের এই নয় মাস স্বাভাবিক জীবন যাপন করারই পরামর্শ দেওয়া হয়। তবু কিছু কিছু কাজ আছে, এমন কিছু কাজ আনে যা কোনও গর্ভবতী মহিলারই করা উচিত নয়। দেখে নিন কোন কোন কাজ থেকে গর্ভবতী মহিলাদের দূরে থাকা উচিত।

গর্ভাবস্থায় যে খাবার খাওয়া উচিত নয়

গর্ভাবস্থা হল শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিক থেকেই গভীর পরিবর্তনের একটি সময়। এই নয় মাসে করা পছন্দগুলি মা এবং অনাগত সন্তান উভয়ের মঙ্গলকে উল্লেখ যোগ্য ভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যত্ন এবং সচেতনতার সাথে এই সময়টিকে অতিক্রম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেউ সাথে কিছু খাবার আছে যা আমাদের এড়িয়ে চলাও জরুরী তাহলে চলুন সেই খাবার গুলি সম্পর্কে ধারনা নেই।

গর্ভাবস্থায় কাঁচা মাছ মাংস খাওয়া উচিত নয়

গর্ভবতী মহিলাদের কাঁচা মাছ এবং মাংস খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। আধাসিদ্ধ বা অল্প সিদ্ধ মাংস বা মাছ , কাঁচা ডিম অথবা আধসিদ্ধ ডিম খাওয়া থেকে থেকে এই সময় দূরে থাকুন।

গর্ভবতী মহিলাদের স্মোকড সিফুড বা আনপাস্তুরাইজড ডেয়ারি আইটেম মোটেও খাওয়া উচিত নয় । এই সময় মহিলাদের ডায়েট চার্টে লিন প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, অনেক ফল, শাক সবজি এবং জল রাখা উচিত।

গর্ভাবস্থায় ক্যাফেইন খাওয়া উচিত নয়

ক্যাফেইন গর্ভবতী মহিলাদের মোটেও খাওয়া উচিত নয়। সেই কারণে গর্ভাবস্থায় কফি খেতে বারণ করা হয়ে থাকে। ক্যাফেইন রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া “ক্যাফেইন” খেলে হার্ট বেড়ে যেতে পারে এবং শরীরে জলের ঘাটতি দেখা যাওয়া সম্ভবনা থাকে। মনে রাখবেন চা এবং কফি ছাড়াও চকোলেট এবং সোডাতেও ক্যাফেইন থাকে।

গর্ভাবস্থায় ডাক্টারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া উচিত নয়

অনেক সময় আমরা টুকটাক সর্দি কাশি ও মাথা যন্ত্রনার জন্য নিজেরই দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাই। গর্ভাবস্থায় এই কাজটি একদমই করা চলবে না। যে কোনও রকম শারীরিক সমস্যার জন্য গর্ভবতী মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বাধ্যতা মুলক। নিজে নিজে কোনও ওষুধ খাবেন না। এতে কিন্তু আপনার গর্ভস্থ সন্তানের বড় ক্ষতি সম্ভবনা থাকে।

গর্ভাবস্থায় মানসিক এবং শারীরিক স্ট্রেসের মধ্যে হটটাবে রিল্যাক্স করতে অবশ্যই ভালো লাগবে। কিন্তু এটা করা গর্ভবতী মহিলাদের পক্ষেও কোন ভাবেই করা উচিত নয়। সনা বাথ থেকেও দূরে থাকুন গর্ভবতীরা। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে আপনার গর্ভস্থ সন্তানের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা উচিত নয়

খুব বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উচিত নয়। এর ফলে পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে এবং শিরায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনার যদি অনেকক্ষণ বসে কাজ করতে হয়, তাহলে মাঝে মাঝে ব্রেক নিন এবং পা দুটো মাঝে মাঝে টুলের ওপরে তুলে আরাম করুন।

গর্ভাবস্থা: নিয়ে অনেক জায়গায় যাবে না অনেক কিছু পড়তে পারবেন না এমন অনেকে আপনাকে অনেক কিছু বলবে। কিন্তু এই সব কথায় কান দিবেন না বা কিছুতে বিশ্বাস করবেন না। আপনার কিসে সমস্যা হচ্ছে, তা নিজে দেখে নিন। প্রয়োজনে ডাক্তারের সরনাপর্ন হন।

আরও পড়ুনঃ

গর্ভাবস্থায় কিছু প্রশ্ন উত্তর

আমি কি গর্ভাবস্থায় আমার নিয়মিত ব্যায়ামের রুটিন চালিয়ে যেতে পারি?

যদিও কিছু ব্যায়াম নিরাপদ, তবে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাতে সেগুলি আপনার নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জন্য উপযুক্ত।

গর্ভাবস্থায় কি কি খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ?

হ্যাঁ, কিছু খাবার যেমন কাঁচা সামুদ্রিক খাবার এবং পাস্তুরিত দুগ্ধজাত খাবার, শিশুর সম্ভাব্য ক্ষতি রোধ করতে এড়ানো উচিত।

গর্ভাবস্থায় আমি কীভাবে স্ট্রেস পরিচালনা করতে পারি?

গভীর শ্বাস, ধ্যান এবং মৃদু ব্যায়ামের মতো কৌশলগুলি কার্যকর হতে পারে। যাইহোক, ব্যক্তিগতকৃত পরামর্শের জন্য আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করুন।

গর্ভাবস্থায় কাজ করা কি নিরাপদ?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, গর্ভাবস্থায় কাজ করা নিরাপদ, তবে সামঞ্জস্যের প্রয়োজন হতে পারে। ব্যক্তিগতকৃত পরামর্শের জন্য আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করুন।

আমাদের কথা

গর্ভাবস্থায় ফুটানো বা বিশুদ্ধ পানি পান করুন। খাবার ঢেকে রাখুুন। পচা বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। গর্ভাবস্থার মাস গুলো পার করার জন্য একটি সামগ্রিক পদ্ধতির প্রয়োজন। শারীরিক, মানসিক এবং পরিবেশগত বিষয়গুলিকে মোকাবেলা করার মাধ্যমে, প্রত্যাশিত পিতা মাতারা মা এবং শিশু উভয়ের মঙ্গলের জন্য একটি সর্বোত্তম পরিবেশ তৈরি করতে পারেন। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই নিলাম ধন্যবাদ সবাইকে। আজকের মত এখানে কথা হবে নতুন কোন পোস্টে।

Sharing Is Caring:

আমি জিয়ারুল কবির লিটন, একজন বহুমুখী ব্লগার, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, জীবনধারা এবং ইসলামিক বিষয় সহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখির প্রতি অনুরাগী। আমি কঠোর অন্বেষণ, অনুসন্ধান, তত্ত্বানুসন্ধান ও অনলাইনের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে আমার আকর্ষক লেখার এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ২০১৫ সাল থেকে ব্লগের মাধ্যমে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং ইতিবাচকতা দিক গুলো নির্ভুল ভাবে সবার সাথে ভাগ করে চলার চেষ্ট করছি।

Leave a Comment