ছেলেদের কিছু গোপন বা যৌন সমস্যা ও তার কারণ জেনে নিন

‘মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন সমস্যা রয়েছে তেমনি এর সমাধানও রয়েছে’। মানুষের ‘যৌনজীবনে বিভিন্ন যৌন সমস্যা’ রয়েছে এবং সেই যৌন সমস্যাগুলির সমাধান রয়েছে। প্রতিটি মানুষ যৌবনের সাথে জন্মগ্রহণ করে। একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই প্রতিটা মানুষের জীবনে যৌবন আসে। এটি মানব জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়। এই সময়ে পুরুষ ও মহিলাদের শরীর ও মনের মধ্যে একটি দুর্দান্ত পরিবর্তন ঘটে। একই সঙ্গে নারী ও পুরুষদের বিভিন্ন ধরণের যৌন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। যা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে।
বি: দ্রঃ আমাদের এই পোস্টটি সর্বশেষ ১৭/০৮/২০২২ ইঙ তারিখে আপডেট করা হয়েছে আশা রাখি এই আরও কিছু তথ্য পেয়ে যাবেন। পোস্ট শেষ পর্যন্ত পড়ুন-

ছেলেদের কিছু গোপন বা যৌন সমস্যা ও তার কারণ জেনে নিন

‘যৌ’ন সমস্যার কথাটার অর্থ অনেক’। ‘যৌ’ন মিলনে সমস্যা’, ‘যৌ’ন সংক্রামিত রোগ’, ‘গর্ভধারনে সমস্যা’ ইত্যাদি সবই যৌন সমস্যায় ফেলে দেওয়া যেতে পারে। এই পোস্টে ছেলেদের মধ্যে যৌন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা স্বাস্থ্যকর যৌনতা এবং যৌন তৃপ্তিতে বাধা দিতে পারে এই টাইপের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হল।

ছেলেদের যৌন সমস্যা সম্পর্কে যেনে নেই:

  • ছেলেদের যৌন সমস্যা নিয়ে কথা বলার সময় প্রথম যে বিষয়টি মনে আসে তা হ’ল অকাল বীর্যপাত। বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পুরুষ তাদের জীবনের কোনও না কোনও সময় যৌন রোগে ভুগেন । তবে ‘সঠিক সময় সঠিক ব্যবস্থা নিয়ে শীঘ্রপতনের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়’।

 

  • অকাল বীর্যপাতের বিপরীতে বিলম্বিত বীর্যপাত একটি যৌন সমস্যা। ‘বীর্যপাতের ক্ষেত্রে খুব বেশি বিলম্ব হয়’ যা উভয়ের পক্ষে অসুবিধে হয়।এই সমস্যাটি সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণের অভাব, ধর্মীয় বা অন্যান্য কারণে যৌন কর্মহীনতা, স্নায়ুর ক্ষতি, কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কারনেও হতে পারে। সঠিক কারণটি সনাক্ত করতে পারলে, এই যৌন সমস্যাটি (বিলম্বিত বীর্যপাত) এড়ানো কোন বিষয় না।

 

  • যৌন কর্মহীনতার আরেকটি গুরুতর কারণ হ’ল রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন। এই ক্ষেত্রে, বীর্যপাতের সময় বীর্য মূত্রনালী দিয়ে বাহিরে না এস মূত্রাশয়টিতে প্রবেশ করে। ফলস্বরূপ, ‘হস্তমৈথুন’ বা যৌন মিলনের সময় আপনার প্রচণ্ড উত্তেজনা থাকলেও বীর্য বের হয় না।  এই ধরনের যৌন সমস্যা দেখা দেয় যখন মূত্রাশয়ের স্পিঙ্কটার পেশীগুলি সঠিকভাবে কাজ করে না । পুরুষ বন্ধ্যাত্বের একটি সম্ভাব্য কারণ হ’ল বিপরীতমুখী বীর্যপাত। কারণের উপর নির্ভর করে সমস্যাটি ওষুধ বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।

আরও পড়ুনঃ

  • ছেলেদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ‘যৌন সমস্যা’ হ’ল ফ্ল্যাগেলেশন বা পুরুষত্বহীনতা। এই রোগে লিঙ্গ  জাগ্রত হয় না বা অল্প সময়ের মধ্যেও আলগা হয়। প্রায় 40 শতাংশ পুরুষ তাদের জীবনের কোনও না কোনও সময় এই যৌন সমস্যাটি অনুভব করেন। এই রোগের আধুনিক নাম ইরেকটাইল ডিসফংশানশন (ইডি)।

 

  • বিভিন্ন শারীরিক বা মানসিক কারণে এই সমস্যা হতে পারে। শারীরিক কারণসমূহ হল মূলত হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস, হরমোনজনিত সমস্যা, স্নায়বিক দুর্বলতা, অন্যান্য বয়স সম্পর্কিত অসুস্থতা, ধূমপান, ওষুধের ‘পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া’, যৌনাঙ্গে আঘাত ইত্যাদি মানসিক কারণগুলির মধ্যে একটি হ’ল উদ্বেগ, মানসিক অসুস্থতা, প্রেমের সাথে আবদ্ধ না হওয়ার চিন্তা ইত্যাদিতবে এ সুচিকিতৎসা দিয়ে ইডি নিরাময় সম্ভব।

 

  • উদাহরণস্বরূপ, ভায়াগ্রা কার্যকর। এছাড়াও নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন, বিশেষত এ্যারোবিক ব্যায়াম বিশেষ উপকারী। তবে, যদি মনে হয় যে ইরেকটাইল ডিসফংশানটিতে সমস্যা আছে তাহলে সত্বর কোন ভাল ইউরোলজিস্ট বা সেক্সোলজিস্টের পরমর্শ নেওয়া উচিৎ। উনি যথাযথ পরীক্ষা করে দেখবেন যে ধ্বজভঙ্গের কারণ শারীরিক না মানসিক এবং সেই অনুসারে চিকিৎসা করবেন।

 

  • যৌন কর্মহীনতার আরেকটি সমস্যা হ’ল পুরুষদের যৌন ক্ষুধা হ্রাস। এই সমস্যাটি মূলত শরীরে টেস্টোস্টেরনের হরমোন হরমোনগুলির নিম্ন স্তরের কারণে ঘটে। তবে অনেক সময় মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ, ডায়াবেটিস, অস্বাভাবিক রক্তচাপ দেখা দেয়া ইত্যাদির ফলেও যৌন ইচ্ছা কমে যেতে পারে।চিকিতৎসার জন্য একজন চিকিতৎসকের (সেক্সোলজিস্ট) পরামর্শ নেওয়া উচিত’। তবে দেখা গেছে যে শারীরিক ক্রিয়াকলাপে বা ব্যায়াম করলে যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

 

এ ছাড়া এইচআইভি, গনোরিয়া, সিফিলিস ইত্যাদির মতো পুরুষদের মধ্যে বিভিন্ন ‘যৌন সংক্রামিত’ রোগ যৌন জটিলতার কারণ হয়। তবে পত্র পত্রিকায় বা ট্রেন-বাসে যে ধাতব রোগটির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তা সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক। মূত্রত্যাগ অনিয়মিত হওয়াও কোনও যৌনরোগ নয়, এটি কিডনি এবং মূত্রনালীর সমস্যা যার জন্য নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

জেনে নিন ১০টি যৌনরোগের লক্ষণ

১. ক্ল্যামিডিয়া

যোনি এবং পুরুষাঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক ক্ষরণ এই রোগের লক্ষণ। গড়ে ৫০ শতাংশ পুরুষ ও ৭০ শতাংশ মহিলাদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়। দ্রুত চিকিৎসা করলে সেরে ওঠা সম্ভব। ক্ল্যামিডিয়া হলে খুব সহজেই অন্যান্য যৌনরোগ বাসা বাঁধে শরীরে।

২. গনোরিয়া

সচরাচর ক্ল্যামিডিয়া এব‌ং গনোরিয়া একই সঙ্গে হয়। যোনি বা পুরুষাঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক ক্ষরণ, মূত্রত্যাগ করার সময় যন্ত্রণা ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ। চিকিৎসা না করলে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ।

৩. যৌনাঙ্গে হার্পিস

৮০ শতাংশ মানুষ যাদের যৌনাঙ্গে হার্পিস রয়েছে তারা জানেন না, তাদের শরীর আসলে একটি বিশেষ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত। অজান্তেই তারা সঙ্গী বা সঙ্গিনীর শরীরে সংক্রামিত করেন এই ভাইরাস। যৌনাঙ্গে ছোট ছোট ফোস্কার মতো র‌‌্যাশ এই রোগের লক্ষণ। ফোস্কা পরার বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে চুলকানির অনুভূতি হয় যৌনাঙ্গে। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বার বার এই র‌্যাশগুলো বেরতে থাকে।

৪. সিফিলিস

প্রাচীনকাল থেকেই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে মানুষ। ঠিক সময়ে ধরা পড়লে সাম্প্রতিককালে সহজেই সারানো যায় এই রোগ। কিন্তু রোগ বেড়ে গেলে তা সাংঘাতিক যন্ত্রণাদায়ক। যৌনাঙ্গ, পায়ু এবং মুখে আলসার হয়, এমনকী চোখ এবং মস্তিষ্কও আক্রান্ত হয়। যৌনরোগগুলোর মধ্যে অন্যতম মারণ রোগ। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের লক্ষণ শরীরে চট করে ধরা পড়ে না।

৫. যৌনাঙ্গে আঁচিল বা ওয়ার্ট

যৌনাঙ্গ এবং পায়ুর আশেপাশে আঁচিলের মতো র‌্যাশ এক ধরনের যৌন রোগ। একত্রে একসঙ্গে অনেকগুলো আঁচিল দেখা যায়। হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস, যা সার্ভিক্যাল ক্যানসারের কারণ এবং যৌন সংসর্গে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ছড়ায়, তাই এই রোগের জন্ম দেয়। অনেক সময় এই আঁচিলগুলো ফোস্কার মতো হয় আবার অনেক সময় এগুলো আলসারেও পরিণত হতে পারে।

৬. হেপাটাইটিস বি

অনেকেই হয়তো জানেন না, এই রোগটিও যৌন সংসর্গের ফলে ছড়ায়। একইভাবে ছড়াতে পারে হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস সি তবে তার সংখ্যা খুবই কম। লিভার সংক্রান্ত জটিলতা, মূত্রের রং পরিবর্তন, গা বমি ভাব ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ হতে পারে।

৭. এইচআইভি

এইচআইভি ভাইরাস মারণ নয় কিন্তু এই রোগের মূল লক্ষণ শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে পড়া। তাই এই ভাইরাস শরীরে থাকলে অন্য যে কোনও কঠিন রোগ হলে তা মারণ আকার ধারণ করে।

৮. যৌনকেশে উকুন

মাথার চুলের মতো যৌনাঙ্গের কেশেও উকুন বাসা বাঁধতে পারে এবং শারীরিক মিলনের সময়ে তা অন্যের শরীরে সংক্রামিত হয়। যৌনাঙ্গের আশপাশে চুলকানি হলে তা এই কারণে হতে পারে।

৯. ট্রাইকোমোনিয়াসিস

যৌনাঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক স্রাব, সহবাসের সময় যৌনাঙ্গে ব্যথা এবং প্রস্রাবের সময় ব্যথা এই রোগের লক্ষণ, যদিও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।

১০.ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস

দুর্গন্ধযুক্ত যোনি স্রাব এই রোগের একটি লক্ষণ। অন্যান্য রোগের তুলনায় এই রোগ সহজে নিরাময় হয়।

Sharing Is Caring:

আমি জিয়ারুল কবির লিটন, একজন বহুমুখী ব্লগার, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, জীবনধারা এবং ইসলামিক বিষয় সহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখির প্রতি অনুরাগী। আমি কঠোর অন্বেষণ, অনুসন্ধান, তত্ত্বানুসন্ধান ও অনলাইনের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে আমার আকর্ষক লেখার এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ২০১৫ সাল থেকে ব্লগের মাধ্যমে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং ইতিবাচকতা দিক গুলো নির্ভুল ভাবে সবার সাথে ভাগ করে চলার চেষ্ট করছি।

4 thoughts on “ছেলেদের কিছু গোপন বা যৌন সমস্যা ও তার কারণ জেনে নিন”

  1. It’s actually a nice and useful piece of information. I’m satisfied that
    you simply shared this helpful info with us. Please keep us informed like this.
    Thanks for sharing.

    Reply

Leave a Comment