কি পেলাম জীবনে! আর কি হাড়ালাম এই চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে, সুন্দর সাভাবিক জীবনের ফিরে আসার অনেক উপায় রয়েছে। জীবনে মানসিক শান্তির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিচ্ছু নেই।
ভুমিকা
লাইফ স্টাইল: বাহ্যিক নকল সুখ-শান্তি অন্তরের শান্তি বিনষ্ট করতে পারে। বেশিরভাগ সময় উদ্বিগ্ন হওয়া, যে কোন বিষয় ব্যক্তিগতভাবে নেওয়া, অবাস্তব প্রত্যাশা করা এবং হিংসা করা মানসিক শান্তি নষ্টের মুল কারন। দিনের শেষে এগুলোই একত্রিত হয়ে মানসিক চাপে পরিণত হয়।
আর তখনি আমার খুজতে থাকি কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। মানসিক অশান্তি একটি নীরব ঘাতক। অন্য দিকে প্রশান্তি বা মানসিক শান্তির শক্তি আমাদের মনকে শান্ত রাখে এবং আমাদের পথকে আরও স্পষ্টভাবে দেখতে এবং লক্ষ্যগুলিতে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।
প্রকৃত সুখ আসে মনের শান্তি বা মানসিক প্রশান্তি থেকেই আসে। এর জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানুষকে সহযোগিতা করা, ক্ষমা করা এবং কৃতজ্ঞতার সাথে তাদের অবদান স্মরণ করা।
ধ্যান করার মাধ্যমেও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা কমানো যায়। তবে সবার আগে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। গন্তব্য খুঁজে পেতে নিজের মনকে স্থির করতে হবে এবং নিজের প্রতি নিজেকেই আরও সহযোগিতা করতে হবে।
আজকে পোস্টে আমরা ‘কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়?’ এই প্রশ্নের উত্তর কোরআন হাদিস ও মেডিক্যাল সাইন্স থেকে খুজার চেষ্ট করব। উত্তর পেতে হলে আপনাকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
মানসিক শান্তি কি?
মানসিক শান্তি বলতে মনের শান্তিকেই বুঝায়। একজন মানুষ যখন তার সমস্ত আকাঙ্খা পূরণ করার সুযোগ পায় তখন সে অবশ্যই মানসিক শান্তি অনুভব করে। আর এই সুযোগ মানুষ তখনই পায় যখন সে তার সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে তার অনুগ্রহ লাভ করে। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন,
অর্থাৎ, যারা ঈমান এনেছে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের অন্তর প্রশান্ত হয়, নিশ্চয়ই আল্লাহর স্মরণে অন্তরগুলো প্রশান্ত হয় বা প্রশান্তি লাভ করে। (সুরা রাদ, আয়াত নং: ২৮)
একজন মুসলিম হিসেবে আপনি মনের শান্তি কোথায় পাবেন?
একজন মুসলিম হিসাবে কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? সেটা আপনি জানেন কিন্ত তা করার আগ্রহ খুজে পান না।
আপনি যদি একজন মুসলিম হন এবং আল্লাহ তায়ালাকে ভালোবাসেন। তবে মনের শান্তি পাওয়ার জন্য মসজিদে যান ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন।
শুধু তাই নয় নামাজের মাধ্যমে আপনি মানসিক শান্তি পাবেন। কারণ নামাজে দাঁড়ালেই আমাদের সকল উত্তেজনা দূর হয়ে যায়। আপনার চাওয়া গুলি সিসজায় গিয়ে আল্লাহ্ কাছে চান। নিশ্চাই তিনি আপনারকে নিরাশ করবেন না।
মানুষ আল্লাহ্ প্রতি বিশ্বাস আনলে তার মন থেকে সব খারাপ চিন্তা দূর হয়ে যায়। মনের ভিতর এক প্রকার শান্তি অনুভব হয়। মসজিদই একমাত্র মানুষের জন্য মানসিক শান্তির স্থান।
আপনি যদি সত্যিই আল্লাহকে ভালোবাসেন তাহলে আপনি মসজিদে গেলে অন্যরকম শান্তি অনুভব করবেন। আপনি তাৎক্ষণিক ভাবে আপনার মনের সমস্ত খারাপ চিন্তা বা সমস্ত উত্তেজনা ভুলে যাবেন।
আরও পড়ুনঃ
- কালা যাদু/জাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিক কি কিভাবে কাজ করে?
- সাদা স্রাব কেন হয়-বন্ধ করার উপায়
- লম্বা হওয়ার উপায় ও ব্যায়াম
মানসিক শান্তি পাওয়া উপায়
কেউ একা থাকতে পছন্দ করে, তো কেউ নিজের পছন্দ অনুযায়ী হলে মনে শান্তি অনুভব করে। আবার কেউ দলোবদ্ধ ভাবে থাকলে প্রশান্তি অনুভব করে। মনের শান্তি প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা হতে পারে।
চিন্তামুক্ত জীবনের জন্য নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার বলেন, ‘আপনি নিজেকে কতটা শান্তি দেবেন তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার নিজের ওপর।
আমরা যদি প্রতিদিন বা প্রতি মুহূর্তের ইতিবাচক দিক নিয়ে চিন্তা করেন, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কারণ আমাদের জীবনে অনেক কিছু আছে, যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
তাই আমরা যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না তার জন্য আমাদের অনুশোচনা করা উচিত নয়। আমাদের সেই জিনিসগুলি এড়িয়ে চলা উচিত, যা আমরা নিজের জীবনে মেনে নেব না।
আমরা নিজেরা চাই না যে, কেউ আমাদের সম্পর্কে খারাপ কথা বলুক বা খারাব মন্তব্য করুক। তাই আমাদের অন্যদের সাথে এমনটি করা উচিত নয় যা করলে সে খারাব মন্তব্য করার সুযোগ পাবে।
মনে শান্তি রাখতে হলে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকাই উচিৎ। কর্মক্ষেত্রে নিজের জন্য জায়গা তৈরি করা। আপনি যদি কাউকে অপছন্দ করেন তবে তার সাথে আপনার শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত।
সবশেষে, আপনার জীবনে এমন কিছু বন্ধু রাখুন যারা কথা বলার বা আপনার অনুভূতি প্রকাশ করার জায়গা হবে। কারণ, আমাদের সকলের জীবনেই নির্ভরতা প্রয়োজন। যে কেউ যে কোন ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল হতে পারে।
শুধু তাই নয় ব্যস্ততার মাঝেও প্রশান্তি পাওয়া যায়। আমাদের মনের শান্তি বজায় রাখতে ছোট এবং সহজ কিছু উপায় রয়েছে তা দেখে নিন।
নিজের উপর চাপ নিয়ন্ত্রন রাখা
অনেকে বলেন, সহজ কাজ দিয়ে দিন শুরু ককরলে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু আসলে আপনার দিন শুরু করা উচিত কঠিন কাজ গুলি দিয়ে। কারণ, আপনি যখন আপনার দিনের কঠিক কাজ গুলি আগে শেষ করবেন, তখন আপনার উপর থেকে একটি বিশাল চাপ নেমে যাবে। এর পরে, আপনি সারাদিন একটি প্রফুল্ল মেজাজে কাজ করতে পারবেন এবং মানসিক শান্তি পাবেন।
অপ্রাপ্তিগুলো স্বীকার করা
আমাদের সব চাওয়া পূরণ হয় না। প্রত্যেকেরই কিছু অপূর্ণতা থেকে যায়। এই অপূর্ণতাগুলিকে মেনে নেওয়া মানসিক শান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যা কিছু আছে, তার মধ্যে অবশ্যই কিছু না কিছু ভালো থাকবে। সেই ভালো গুলি নিয়ে ভালো থাকা আপনার ভেতরের অর্ধেক অশান্তি দূর করবে।
মানুষ যা ভাবে তা ভাবতে দিন
আমাদের মানসিক অশান্তির আরেকটি কারণ হলো মানুষ কী ভাববে তা নিয়ে চিন্তা করা। অনেক ক্ষেত্রে, লোকেরা সত্যিই আপনার সম্পর্কে কিছুই ভাবে না, তবে আপনি অনেক কিছু ভেবে নেন। নিজেকে চিন্তামুক্ত জীবনের স্বাদ দিতে হলে ‘মানুষ কী ভাববে’ সেই চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্তি দিতে হবে। এতে করে আমাদের মনের চাপ দূর হবে এবং আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
এই মুহূর্তের তিনটি ভালো দিক
সব দিন ভালো যাবে না – এটাই স্বাভাবিক। অনেক সময় একের পর এক বিপর্যয় আসতে পারে আপনার জীবনে। সেই সময় মনকে স্থির ও শান্ত রাখার চেষ্ট করুন। এই দুর্যোগ সত্ত্বেও আপনার জীবনে ঘটে যাওয়া অন্তত তিনটি ভালো জিনিসের কথা ভাবুন। এটা হতে পারে যে আপনি কাউকে কিছু দিয়ে সাহায্য করেছেন, বিনিময়ে কিছু না চেয়ে, শুধুমাত্র কারো ভালো চেয়েছেন। নিজের ইতিবাচক দিকগুলির জন্য সর্বদা নিজেকে অভিনন্দন জানান। স্টুডেন্ট হলে আপনি অনেক কিছু সত্ত্বেও আপনার পড়াশোনায় ভাল ফলাফল করতে পেরেছেন। এরকম চিন্তা করে নিজে সান্তনা দিন।
নিজের যত্ন
এই পদ্ধতি খুবই সহজ। কিছুই না, আপনার জানালা বা ব্যালকনিতে যান এবং দৃঘ্য শ্বাস নিন – এটি আপনাকে শান্ত করবে। শুধু তাই নয়, নিজেকে সময় দিন। অন্য কেউ আপনার জিনিসের যত্ন নিচ্ছে কিনা তা না ভেবে নিজের যত্ন নিন এবং মানসিক শান্তিতে পূর্ণ জীবন উপভোগ করুন।
আরও পড়ুনঃ
- কিভাবে মেয়ে পটাতে হয়
- মেয়েরা কেমন ছেলে পছন্দ জেনে নিন
- নারীর স্তনের প্রতি কেন আকৃষ্ট হন পুরুষরা? অজানা ১০টি কারণ
- কথা গুলো আমি মেয়ে হয়ে বলছি সবার একবার পড়া উচিৎ
ডাক্তারদের মতে মানসিক শান্তি পাওয়ার উপায়
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি ওয়েবসাইটের মতে, মানুষ সবসময় ‘পাওয়া’ এবং ‘না পাওয়া’- এই দুটির মধ্যে ‘পাওয়া’ কে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই হতাশা, বিষন্নতা, মানসিক অশান্তি জীবনকে সহজেই গ্রাস করে। ফলে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের নেশা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।
মানসিক ডাক্তারদের মতে মনের এই তিক্ততা ঝেড়ে ফেলে সুন্দর জীবনের জন্য মাত্র তিনটি উপায় অবলম্বন করতে হবে। এই উপায় গুলি হল-
ধ্যান বা যোগ ব্যায়াম করা
প্রাচীনকাল থেকেই ধ্যান এবং যোগ ব্যায়ামকে মনের শান্তির জন্য সর্বোত্তম উপায় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। প্রতিদিন ১০ মিনিট মেডিটেশন করলে সারা দিনের ক্লান্তি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। তাই মানসিক অবসাদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন কিছুটা সময় নিয়ে ধ্যান করতে পারেন।
শারীরিক ব্যায়াম করা
ব্যায়াম অতিরিক্ত ওজন কমানোর পাশাপাশি মানসিক অবস্থার উন্নতিতেও সাহায্য করে। ব্যায়াম করলে ডোপামিন এবং সেরোটোনিন নামক মস্তিষ্কের রাসায়নিক নিঃসৃত হয়, যা মানসিক ক্লান্তি দূর করতে এবং মনে শান্তি আনতে সাহায্য করে। এমনকি প্রতিদিন ১৫ মিনিটের ব্যায়াম মাদকাসক্তিতে আসক্ত ব্যক্তিরাও উপকার পাবে।
পছন্দের কাজ করা
আপনার মনকে ব্যস্ত রাখতে আপনার পছন্দের কিছু করুন। যেমন, গান শোনা, বই পড়া, বাগান করা ইত্যাদি কাজে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট সময় দেওয়া উচিত। প্রতিদিন পছন্দের কাজ গুলো করে সহজেই মানসিক অবসাদ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
প্রশ্ন উত্তর
মানসিক শান্তি পাওয়ার বেশ কিছু উপায় রয়েছে যেমন- আপনি মুসলিম হন তাহলে মসজিদে নামাজ আদায় করুন মনে একটা শান্তি অনুভব করবেন। আপনি চাইলে ধ্যান,ব্যায়ামও করতে পারেন এই বিষয়ে আমরা এই ‘কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়‘ পোস্টে কোরআন হাদিস ও মেডিক্যাল সাইন্স থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি পোস্টটি পড়ুন উপকার পাবেন।
মানসিক প্রশান্তি পেতে হলে মানসিক চাপ না বাড়িয়ে এমন কাজ করা উচিত যা আপনাকে আনন্দ দেয়। মানুষ কি ভাবলো না ভাবলো সেই চিন্তা না আপনি কোন ভাল কাজটি করলে সেটা নিয়ে ভাবুন। মানুষকে সাহায্য করুন, সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইতে থাকুন দেখবেন আপনা আপনি মনে শান্তি চলে আসবে। এই ‘কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়‘ পোস্টে কোরআন হাদিস ও মেডিক্যাল সাইন্স থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি পোস্টটি পড়ুন।
মানসিক শান্তি বলতে মনের শান্তিকেই বুঝায়। একজন মানুষ যখন তার সমস্ত আকাঙ্খা পূরণ করার সুযোগ পায় তখন সে অবশ্যই মানসিক শান্তি অনুভব করে।
মানুষ সবসময় ‘পাওয়া’ এবং ‘না পাওয়া’- এই দুটির মধ্যে ‘পাওয়া’ কে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই হতাশা, বিষন্নতা, মানসিক অশান্তি জীবনকে সহজেই গ্রাস করে। ফলে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের নেশা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। যাইহোক শান্তি পেতে হলে আপনি ধ্যান বা যোগ ব্যায়াম, শারীরিক ব্যায়াম, নিজের কাছে ভালো লাগে এমন কাজ গুলি করতে পারেন এতে আপনার মনে শান্ত হবে। এই ‘কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়‘ পোস্টে মেডিক্যাল সাইন্স থেকে তথ্য উপাত্ত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি পোস্টটি পড়ুন।
শেষ কথা
মানসিক প্রশান্তি পেতে হলে মানসিক চাপ না বাড়িয়ে এমন কাজ করা উচিত যা আপনাকে আনন্দ দেয়। মানুষ কি ভাবলো না ভাবলো সেই চিন্তা না আপনি কোন ভাল কাজটি করলে সেটা নিয়ে ভাবুন। মানুষকে সাহায্য করুন আপনা আপনি মনে শান্তি চলে আসবে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ হবে। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের মত এখানেই, ধন্যবাদ! আমাদের সাথে থাকার জন্য।