আমাদের সমাজে নারী নির্যাতন বা নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা খুবই সাধারণ ঘটনা। আর এ কারণেই নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ২০০০ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন পাস করা হয়।
এ আইনের মাধ্যমে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত কিছু অপরাধ চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে।
![তালাক ও নারী নির্যাতন মামলা খরচ](https://i0.wp.com/sahajjobd.com/wp-content/uploads/2023/03/%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%95-%E0%A6%93-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%96%E0%A6%B0%E0%A6%9A.jpg?resize=800%2C500&ssl=1)
যদিও বর্তমানে ঘরে এবং বাইরে সর্বত্রই পুরুষরা নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু আত্মসম্মানের কারনে প্রকাশ করতে পারছেন না। আবার নারী নির্যাতন বিরোধী আইন মত কোন আইন না থাকায় আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না পুরুষরা।
বর্তমানে নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন নারীরা। পরকীয়া ও অবাধ্য স্ত্রীকে শাসন করেতে গেলেই স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও যৌতুকের মিথ্যা মামলা দায়ের করছেন নারীরা।
বাংলাদেশের আইনে দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি এমন কোন নারীর সঙ্গে তার স্বামীর সম্মতি ছাড়া যৌনসঙ্গম করে এবং অনুরূপ যৌনসঙ্গম যদি ধর্ষণের অপরাধের মধ্যে না পরে তাহলে সে ব্যক্তি ব্যভিচারের দায়ে দায়ী হবে।
আরও পড়ুনঃ মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা থেকে বাচার উপায়
শুরুতে তালাক সম্পর্কে জেনে নিব।
তালাক কি এবং কেন?
তালাক হল একমাত্র আইনি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি বিয়ে বা সংসার ভেঙে দেওয়া হয়। সাধারণত একটি বিবাহবিচ্ছেদ অনেক সমস্যার জন্ম দেয়।
বিবাহবিচ্ছেদ একটি বিবৃতি বা একে অপরের থেকে পৃথক করার পদ্ধতি। যা স্বামী বা স্ত্রী উভয়ের কাছ থেকে আসতে পারে।
বাংলাদেশে তালাক সংক্রান্ত আইন ও প্রবিধানগুলি মুসলিম পরিবার অধ্যাদেশ 1961-এ পাওয়া যায়। যা বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য কার্যকর লিখিত আইন। খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধদের মতো অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের জন্য আলাদা লিখিত আইন রয়েছে। তবে বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য বিবাহ বিচ্ছেদের কোনো লিখিত আইন এখনো নেই।
বাংলাদেশে বিবাহ এবং বিবাহবিচ্ছেদ সংসদ, মুসলিম পারিবারিক আইন বা শরিয়া গৃহীত আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। পশ্চিমা দেশে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আইনজীবী থাকা প্রয়োজন, তারা আইনজীবী ছাড়া বিবাহবিচ্ছেদের কোনো উদ্যোগ নেয় না কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আইনজীবী থাকা প্রয়োজন বলে মনে করা হয় না বা সবসময় ডাকা প্রয়োজন বলে মনে করা হয় না একজন আইনজীবীকে.
বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করলে দেখা যায় সম্মতিক্রমে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বেশি। তবে আইনে চুক্তির ভিত্তিতে বিবাহবিচ্ছেদেরও বিধান রয়েছে।
এবার জেনে নিব যদি কোন নারী নির্যাতন অস্বীকার হন তাহলে কিভাবে কি করবেন চলুন সে বিষয়ে আগে জেনে নেই।
নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার প্রক্রিয়া
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। ধর্ষণ, অপহরণসহ যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়েছে। এর মধ্যে কিছু ঘটনা প্রকাশিত হলেও অধিকাংশ লোক লজ্জার কারণে ধামাচাপা দেওয়া হয়। 2000 সালে, সরকার এই ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের আইনি সুবিধা প্রদানের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন তৈরি করে। 2013 সালে এই আইনটি আরও কঠোর করার জন্য সংশোধন করা হয়েছিল। আইনি প্রতিকার পেতে কোথায় যেতে হবে, কার কাছে যাবেন সেই বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
নারী ও শিশু নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত অপরাধ
বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০১৩ অনুযায়ী যেসব অপরাধ এ আইনের অন্তর্ভুক্ত তা হলো- যৌন নিপীড়ন, যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো, দহনকারী বা ক্ষয়কারী, নারী পাচার, শিশু পাচার, নারী ও শিশু অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, নারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা, ভিক্ষাবৃত্তি ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুকে অঙ্গহানি, ধর্ষণের ফলে জন্ম লাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান।
থানায় মামলা গ্রহন না করলে আদালতে
যদি কোনো কারণে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভিযোগটি গ্রহণে অঅস্বীকার প্রকাশ করেন, তাহলে মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি জানিয়ে আবেদনপত্র সহ সরাসরি সরাসরি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা যাবে।
এ ক্ষেত্রে মামলাকারী ব্যক্তি প্রথমে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমনে নিযুক্ত নারী ও শিশু পাবলিক প্রসিকিউটরের (পিপি নারী ও শিশু) কাছে প্রত্যয়ন ও সত্যায়িত করে মামলা করতে হবে। এ ছাড়া আবেদনটি বিচারকের সামনে হাজির করার সময় অভিযুক্তকে আদালতে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দী দিয়ে মামলা করতে হবে। আদালত অভিযুক্তের জবানবন্দি শোনার পর মামলাটি আমলে নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবী
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় বাদী নিজস্ব কোনো আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজন নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯২ ধারা অনুযায়ী তিনি সরকারের পক্ষ থেকে আইনজীবী পাবেন। তিনি মামলার সব তত্ত্বাবধান করবেন। যদি বাদী নিজে আইনজীবী নিয়োগ দিতে চান তাহলে সেই আইনজীবী সরকারি আইনজীবীর অধীনে কাজ করবেন। সরকারের পক্ষ থেকে নিয়োগ দেওয়া আইনজীবীকে কোনো খরচ দিতে হবে না।
নারী ও শিশু নির্যাতন বিচার প্রক্রিয়া
দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। এই আইনে ট্রাইব্যুনাল রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচার পরিচালনাও করতে পারেন। কোনো ব্যক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বা বিচারক তার নিজের মতামতে উপযুক্ত মনে করলে বিচারক শুধুমাত্র মামলার দুই পক্ষ এবং তাদের নিযুক্ত আইনজীবীদের নিয়ে বিচার পরিচালনা করতে পারেন। তা করতে ব্যর্থ হলে আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন বিচারের মেয়াদ
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করবে। ট্রাইব্যুনাল ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে, এটি তার কারণগুলি উল্লেখ করে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। যার একটি কপি সরকারকেও দিতে হবে। এ ছাড়া এ ক্ষেত্রে সরকারি আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ৩০ দিনের মধ্যে সরকারের কাছে যুক্তিযুক্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এই ধরনের দাখিল প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই আইনের অধীনে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ না করলে, ট্রাইব্যুনাল সরাসরি বিচারের জন্য অভিযোগ গ্রহণ করতে পারে। এই বিধান বাস্তবে বাস্তবায়িত হলে জনগণের অভিযোগ করা অনেক সহজ হবে।
নিরাপত্তামূলক হেফাজত
যদি ট্রাইব্যুনাল এই আইনের অধীনে বিচার চলাকালীন একজন মহিলা বা শিশুকে সুরক্ষামূলক হেফাজতে রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন, তাহলে ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিতে পারে যে মহিলা বা শিশুকে কারাগারের বাইরে নির্ধারিত স্থানে অন্য কোনো উপযুক্ত ব্যক্তি বা সংস্থার হেফাজতে রাখা হবে। সরকার দ্বারা বিচারের সময় নারী বা শিশুর ক্ষতি থেকে ভিকটিমকে রক্ষা করার জন্য এই বিধান। এছাড়া ট্রাইব্যুনাল আসামিদের চিকিৎসার জন্য হেফাজতে রাখার নির্দেশও দিতে পারে। যাইহোক, ট্রাইব্যুনাল মহিলা বা শিশুর সুরক্ষামূলক হেফাজতের আদেশে মহিলা বা শিশুর মতামত গ্রহণ করবে এবং বিবেচনা করবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন বিচারের তদন্ত
অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তদন্ত শেষ করবেন। আর অপরাধী ধরা না পড়লে তদন্তের আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ না হলে, সময় শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। ট্রাইব্যুনাল চাইলে, তদন্ত অন্য কোনো কর্মকর্তার কাছে ন্যস্ত করার নির্দেশ দিতে পারে। এই আদেশ জারি করার সাত দিনের মধ্যে তদন্তের কাজ শেষ করতে হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন বিচারে আগাম জামিন
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনটি একটি বিশেষ আইন। এ মামলায় হাইকোর্টকে আগাম জামিন দেওয়ার এখতিয়ার দেওয়া হয়নি। বিশেষ আইনে জামিনের ক্ষেত্রে সাধারণত ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানগুলো প্রযোজ্য হবে না। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১৯(২)(৩) ও (৪) উপধারায় জামিনের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির কোনো বিধান ১৯ ধারায় প্রযোজ্য হয়নি। যদিও সামাজিক বাস্তবতার বিষয় চিন্তা করে বেশ কয়েক বছর ধরে হাইকোর্ট থেকে এই ধরনের মামলায় আগাম জামিন দেওয়া হচ্ছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন বিচারের শাস্তি
বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ সংশোধিত ২০১৩ অনুযায়ী, এসব অপরাধ প্রমাণিত হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। এ ছাড়া আর্থিক জরিমানার বিধান রয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন বিচারের সহযোগিতা
আপনি যদি মামলা করতে অসমর্থ হন বা কোনো হুমকির সম্মুখীন হন, তাহলে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন রয়েছে যারা আপনাকে সহযোগিতা করবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল প্রভৃতি।
নারী নির্যাতন মামলায় খরচ
নারী নির্যাতন মামলায় খরচ কেমন হবে এই বিষয়ে সঠিক ভাবে বলা সম্ভব নয় তবে যেহেতু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় বাদী নিজস্ব কোনো আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজন নেই। সেহেতু অন্যান্ন মামলার তুলনায় খরচ অনেক কম হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ ও শাস্তি
সাধারণত সংঘটিত কয়েকটি অপরাধের মধ্যে একটি হল অগ্নিসংযোগকারী উপাদান দ্বারা একজন মহিলা বা শিশুকে আঘাত বা মৃত্যু ঘটানো। দাহ্য পদার্থে এসিড নিক্ষেপের অপরাধও অন্তর্ভুক্ত।
যদি কোনো ব্যক্তি কোনো দাহ্য, ক্ষয়কারী বা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোনো শিশু বা মহিলার মৃত্যু ঘটান বা করার চেষ্টা করেন, তাহলে সেই ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এর পাশাপাশি সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
এছাড়া দাহ্য পদার্থ দ্বারা কেউ আহত হলে সে ক্ষেত্রেও শাস্তির বিধান রয়েছে।
আর যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারীকে পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে বা কোনো অবৈধ বা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো নারীকে নিয়ে আসে বা পাচার করে বা বিদেশে পাঠায় বা ক্রয়-বিক্রয় করে বা কোনো নারীকে ভাড়া বা অন্য কোনো উপায়ে নির্যাতনের উদ্দেশ্যে দেয় বা কোনো নারীকে আটকে রাখে। হেফাজতে, তাহলে এমন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড হবে। অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দায়বদ্ধ হবেন অনধিক বিশ বছরের কিন্তু কম নয় দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দায়বদ্ধ হবেন৷
যদি কোনো ব্যক্তি কোনো শিশুকে বিদেশে নিয়ে আসে বা পাঠায় বা পাচার করে বা কোনো শিশুকে ক্রয়-বিক্রয় করে বা কোনো বেআইনি বা অনৈতিক উদ্দেশ্যে কোনো শিশুকে হেফাজতে রাখে, তাহলে সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডসহ অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
যদি কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধ সংঘটন ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো নারী বা শিশুকে অপহরণ করে, তবে সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা চৌদ্দ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
যদি কোনো ব্যক্তি মুক্তিপণের জন্য কোনো নারী বা শিশুকে আটক করে, তবে সেই ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে বা এমন অপরাধ করে তাহলে সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।
FAQ
যদি কোনো কারণে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভিযোগটি গ্রহণে অঅস্বীকার প্রকাশ করেন, তাহলে মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি জানিয়ে আবেদনপত্র সহ সরাসরি সরাসরি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা যাবে। বিস্তারিত পড়ুনঃ তালাক ও নারী নির্যাতন মামলা খরচ
বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ সংশোধিত ২০১৩ অনুযায়ী, এসব অপরাধ প্রমাণিত হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। এ ছাড়া আর্থিক জরিমানার বিধান রয়েছে।
নারী নির্যাতন মামলা ধারা গুলো হলোঃ ৯ এর ১, ২, ৩, ৪, ৪ এর ক, খ, এবং ৫।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক বিধিমালা ২০০৯ -এর ২১ বিধি অনুযায়ী রেজিস্ট্রার তালাক নিবন্ধনের জন্য ৫০০ টাকা ফি গ্রহণ করতে পারবেন। ৫০ টাকা নকল প্রাপ্তি ফি, প্রতি কিলোমিটার ফি ১০ টাকা যাতায়াত বাবদ ফি ও ১০ টাকা তল্লাশি ফি গ্রহণ করতে পারবেন।
‘শিশু’ অর্থ অনধিক ১৬ বছর বয়সের কোন ব্যক্তি । পূর্বে ১৪ বছর থাকলেও এই ধারার ৯ এর উপধারা (১) এর ব্যাখ্যাতে দুইবার উল্লিখিত ১৪ বছরের শব্দগুলির পরিবর্তে উভয় স্থানে ১৬ বছর প্রতিস্থাপিত হইবে।
২০০০ সালে, সরকার এই ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের আইনি সুবিধা প্রদানের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন তৈরি করে। ২০১৩ সালে এই আইনটি আরও কঠোর করার জন্য সংশোধন করা হয়েছিল।
নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করবে। ট্রাইব্যুনাল ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে ব্যর্থ হলে, এটি তার কারণগুলি উল্লেখ করে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। যার একটি কপি সরকারকেও দিতে হবে। এ ছাড়া এ ক্ষেত্রে সরকারি আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ৩০ দিনের মধ্যে সরকারের কাছে যুক্তিযুক্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন
বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ সংশোধিত ২০১৩ অনুযায়ী, এসব অপরাধ প্রমাণিত হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।