ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম PDF

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র (Business Agreement) লেখার সময় কিছু বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম ও নির্দেশনা অনুসরণ করা উচিত। চুক্তিপত্রটি অবশ্যই স্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট এবং দুটি পক্ষের অধিকার করণিয় ও দায়িত্ব সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে। আমরা এখানে কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো, যা ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার জন্য সহায়ক হতে পারে এছাড়াও আমরা এখান একটি pdf নমুনা ফাইল দিয়েছে যা আপনাকে সাহাজ্য করবে।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম PDF
ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম PDF

শুরুতেই নমুনা চুক্তিপত্রটি দেখে নিন।

                                                                 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

                                                                      অংশীদারী চুক্তিপত্র
অত্র চুক্তি নামা দলিল অদ্য ১০/০৪/২০১26 ইং তারিখ নিম্ন লিখতি পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সম্পাদিত হইল।
১ম পক্ষঃ-
মেথ্যা সামসুল আলম, জন্ম তারিখ-০১/০৫/১৯৬৮ ইং, পিতা- মৃত মেখা সুলতান মিয়া, মাতা-সুফিয়া বেগম, ঠিকানখঃ ২৩/৬, এভিনিউ-৫, ব্লক-সি, থানা-পল্লবী, মিরপুর-১১, ঢাকা, জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৫৪৫৪৫৫৭৮৭৮৭ ,  জাতীয়তা-বাংলাদেশী, ধর্ম- ইসলাম পেশা বা

২য় পক্ষঃ-
রতন কুন্ডু  জন্ম তারিখ-০১/০৪/১৯৬৮ ইং, পিতা- মৃত কানাই লাল কুন্ডু সাকিন ৩৬ যুগীনগর লেন, ওয়ারী, থানা-সূত্রাপুর, জেলা- ঢাকা, জাতীয় পরিচয়পত্র নং- ৫৪৫৪৫৫৭৮৭৮৭ ,  জাতীয়তা বাংলাদেশী, ধর্ম সনাতন, পেশা-ব্যবসা।

পরম করুণাময় মহান আল্লাহ তায়ালার নাম স্মরণ করিয়া অত্র অংশীদারী চুক্তিপত্র দলিলের আইনানুগ বয়ান আরম্ভ করিতেছা। যেহেতু আমরা সকল পক্ষগণ পরস্পর পরস্পরকে দীর্ঘ দিন যাবত চিনি ও জানি। এমতাবস্থায় আমরা সকল/উভয় পক্ষগণ একত্রে ব্যবসা পরিচালনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করায় আমরা উপরোক্ত পক্ষ একমত হইয়া আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরসনকল্পে অন্য হাজিরান মজলিশে স্বাক্ষীগণের মোকাবেলায় এই মর্মে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নিম্ন লিখত শর্তাবলীর উপর আস্থা রাখায় ভবিষ্যৎ জটিলতা নিরসনকল্পে অত্র ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র দলিলে আমরা ১ম ও ২য় পক্ষদ্বয় অত্র ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র দলিলে আবদ্ধ হইলাম।

                                                                                   পাতা - ০২
শর্তবলী
১। নিটিং অয়েল, কাটিং অয়েল, গ্রীজ ব্যবহৃত মোলি প্রক্রিয়াজাত করণ মেসার্স ডেল্টা লুব্রিকেটিং এন্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ গট নং-বি- ৫১, ঢাকা শিল্প ইন্ডাট্রিজ নগরী, বিসিক, কেরাণীগঞ্জে বিদ্যমান শিল্পটি যৌথভাবে পরিচালিক হইবে।
২। অত্র দলিল সহি সম্পাদনার তারিখ হইতে অত্র অংশীদারী ব্যবসার মেয়াদ শুরু হইবে এবং আইনানুগ রূপে অবসান না হওয়া পর্যন্ত অত্র ব্যবসা চলিবে।
৩। ব্যবসার মূল অফিস ঢাকা শহরের অবস্থিত থাকিবে, যাহার ঠিকানা ১০২ দয়াগঞ্জ, সূত্রাপুর জেলা-ঢাকা এবং অন্যান্য স্থানে উভয় পক্ষের লিখতি অননুমোদন লইয়া শাখা অফিস খোলা যাইবে।
৪। (ক) ব্যবসার অংশীদারগণের পুঁজি ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ) টাকা তন্মধ্যে ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে বিয়োগ করিবে এবং অংশীদারদের মালিকানার অংশ ১ম পক্ষ ৬০% (ষা্ট ভাগ) এবং ২য় পক্ষ ৪০% (চল্লিশ ভাগ) থাকবে।
(খ) ব্যবসার এককালীন পুঁজি ছাড়াও যে কোন সময় ব্যবসার উন্নতির জন্য পুঁজির পরিমাণ হ্রাস বৃদ্ধি উভয় পক্ষের সম্মতিতে করিতে পারিবেন।
৫। অংশীদারী ব্যবসার লাভ বা ক্ষতির অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে বন্টন করিয়া লইবেন। 




                                                                                   পাতা- ০৩

৬। প্রত্যেক ০১ (এক) মাসে অন্তর অন্তর অত্র ব্যবসার লাভ ক্ষতির হিসাব প্রস্তুত করা হইবে অংশ ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে হিস্যা পক্ষগণের উপর ন্যস্ত হইবে। তবে প্রতি মাসে লাভের শতকরা অংশ হইতে ১ম পক্ষ ৬০% এবং ২য় পক্ষ ৪০% ভাগে অত্র ব্যবসা রির্জাভ ফান্ডে জমা রাখিবেন।
৭। আনুপাতিক ভিত্তিতে উভয় পক্ষ ব্যবসা সংক্রান্ত দায়দায়িত্ব পালন করিবে, তবে উভয় পক্ষের সর্বসম্মতিক্রমে জনাব মোঃ সামসুল হোসেন ব্যবস্থাপনা অংশীদার হিসাবে দায়িত্ব পালন করিবেন। তিনি সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং তাঁর স্বাক্ষরে ব্যাংক বিসিকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চিঠিপত্র এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজে ব্যবস্থাপনা অংশীদার জনাব মোঃ সামসুল হোসেনকে ঢাকা (কেরাণীগঞ্জ) শিল্প নগরীতে প্লট ক্রয় বিক্রয়ের সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হলো এবং তাকে দলিল সম্পাদনের ক্ষমতা দেওয়া হইল।
৮। এই চুক্তিপত্রের যে কোন পরিবর্তন, পরিমার্জন করিবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে উভয় পক্ষের সর্বসম্মতিক্রমে উহা সম্পন্ন হইবে।
৯। চুক্তিনামা বাতিল বা ব্যবসা বন্ধ ঘোষনা করতে চাইলে কেবলমাত্র পক্ষদ্বয়ের সম্মতিতে এই চুক্তিনামা বাতিল বা ব্যবসা বন্ধ ঘোষনা করা যাইবে। 
১০৷ ব্যবসা চলাকালিন সময়ে আল্লাহ না করুন যদি কোন পক্ষের কেউ মৃত্যুবরন করেন তাহা হইলে মৃত্যুব্যক্তির উত্তরাধিকারীগণ মৃত্যুবরনকারী অংশীদারের অংশ ভোগ করিবেন এবং ঐ অংশের অংশীদার হিসাবে গন্য হইবেন ও সকল প্রকার দায়দায়িত্ব পালন করিবেন।




                                                                                  পাতা- ০৪
১১। উভয়পক্ষের কেহ যদি ব্যবসা চলাকালীন সময়ে কোন কারণে স্ব-ইচ্ছায় অবসর নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন তবে তাহাকে অন্ততপক্ষে ০৩ (তিন) মাস পূর্বে অপর পক্ষকে নোটিশ প্রদান করিতে হইবে। কোন পক্ষ যদি তাহার নিজ অংশ হস্তান্তর করিতে চাহেন তবে অবশ্যই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে হইবে, এক পক্ষ ক্রয় করিতে না চাহিলে সমঝোতার ভিত্তিতে বাহিরের কাহারো কাছে বিক্রয় করিতে পারিবেন।
১২। যদি কোন কারণে ব্যবসায়িক বিষয়কে কেন্দ্র করে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে কোন মতবিরোধের বা বিরোধীতার সৃষ্টি হয় তাহা হইলে পক্ষদ্বয় পরস্পর আলোচনার সাপেক্ষে মিটমাট করিয়া লইবেন অথবা উভয় পক্ষের নির্ধারিত একজন বা শালিস পরিষদ গঠন করিয়া উক্ত শালিস পরিষদের মাধ্যমে বিষয়টি মিটমাট করিয়া লইবেন।
১০। অত্র চুক্তির কার্যকারীতা শুধুমাত্র উল্লেখিত ব্যবসাযর ক্ষেত্রে কার্যকরী হইবে৷










                                                                                         পাতা- ০৫

এতদ্বার্থে স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে সুস্থ শরীরে অন্যের বিনা প্ররোচনায় আমরা উল্লেখিত পক্ষগন নিম্নে উল্লেখিত স্বাক্ষীগণের সম্মুখে নিজ নিজ স্বাক্ষর করিয়া অত্র অংশীদারী দলিল সম্পাদন করিলাম ।

অত্র দলিল ০৫ (পাঁচ) পাতায় কম্পোজকৃত এবং স্বাক্ষী  (০৫) জন বটে।


স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর ও ঠিকানা					১ম পক্ষের স্বাক্ষর
১।
২।									        ২য় পক্ষের স্বাক্ষ
৩।
৪।
৫।

মুসাবিদাকারক
আব্দু্লা খান
এস অফিস গুলশান, ঢাকা।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার নিয়ম PDF বা docx ডাইনলোড করতে নিচের বাটনে থেকে ডাউনলোড করে নিন।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র কী?

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র হলো একটি আইনি নথি বা দলিল, যা দুটি বা একাধিক পক্ষের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত শর্তাবলী, দায়িত্ব, অধিকার, এবং সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতির সুস্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করে।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্রের সংজ্ঞা

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র হলো ০২ জন বা একাধিক পক্ষের মধ্যে বা মৌখিক সমঝোতা, যা নির্দিষ্ট শর্তাবলী এবং কার্যপ্রণালীর উপর ভিত্তি করে গঠিত একটি লিখিত দলিল। এটি একটি আইনগত দস্তাবেজ ও বলতে পারেন, যা পক্ষগনের মধ্যে দায়বদ্ধতা এবং অধিকার সুনিশ্চিত করে এবং আইনি জটিলতা দুর করে।

কেন ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র করতে হয়?
ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র একটি সুস্পষ্ট এবং নির্ভরযোগ্য উপায়ে পক্ষগনের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে। এটি ভুল বোঝাবুঝি, আইনি জটিলতা এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে পক্ষগনকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্রের প্রকারভেদ

মৌখিক বনাম লিখিত চুক্তিপত্র

অনেকেই প্রশু করেন কেন লিখিত চুক্তিপত্র করতে হবে এতে করে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়, তার থেকে বাচতে আমরা তো মৌখিক চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করতে পারি। তাদের উদ্দেশ্যে বলব মৌখিক চুক্তিপত্র দ্রুত সম্পন্ন হলেও এটি প্রমাণের ক্ষেত্রে দুর্বল। অন্যদিকে, লিখিত চুক্তিপত্র আইনি ভাবে আরও শক্তিশালী এবং এটি ভবিষ্যতে পক্ষগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব এড়াতে সাহায্য করে।

সাধারণ চুক্তিপত্র এবং আইনি চুক্তিপত্র

সাধারণ চুক্তিপত্র পক্ষগনের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। তবে আইনি চুক্তিপত্র স্থানীয় আইন অনুসারে সম্পন্ন হয় এবং এটি আইনগত সুরক্ষা প্রদান করে।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার প্রস্তুতি

প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ

চুক্তিপত্র লেখার আগে পক্ষগণকে যে সব তথ্য সংগ্রহ করা জরুরি। এগুতে তাদের নাম, ঠিকানা এবং যোগাযোগের মাধ্যম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

পক্ষগণের নাম ও বিবরণ

চুক্তিপত্রে প্রত্যেক পক্ষের নাম এবং বিবরণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। প্রযোজনে বারবার চেক করে নিতে হবে। এটি ভবিষ্যতে আইনি বৈধতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

পক্ষের পরিচয়: চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী সকল পক্ষের নাম, ঠিকানা এবং আইনি পরিচয়।
চুক্তির উদ্দেশ্য: চুক্তির মূল উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রমের বিস্তারিত বর্ণনা।
শর্তাবলী: দুটি পক্ষের অধিকার, দায়িত্ব, এবং প্রতিশ্রুতি।
মেয়াদ: চুক্তির কার্যকরী সময়কাল।
অর্থনৈতিক শর্তাবলী: অর্থের লেনদেন, মূল্য এবং পরিশোধের শর্ত।
বিচারিক বিচার: যদি কোনো বিরোধ সৃষ্টি হয়, তা কিভাবে সমাধান করা হবে (যেমন: আদালত বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে)।

পরিষ্কার ও নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ

চুক্তিপত্রের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য পরিষ্কারভাবে সহজ ভাষায় সংজ্ঞায়িত করতে হবে যাতে সমস্যার সৃষ্টি না হয় । এতে চুক্তি বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লেখার ধাপ

ভূমিকা লেখার নিয়ম

চুক্তিপত্রের শুরুতেই একটি পরিষ্কার এবং সংক্ষিপ্ত ভূমিকা লেখা উচিত যা আমরা নমুনা চুক্তিপত্রে উল্লেখ করেছি। এতে চুক্তিপত্রের সারমর্ম এবং প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ থাকবে।

শর্তাবলীর বিবরণ

চুক্তিপত্রে প্রত্যেকটি শর্তাবলী বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করতে হবে। এতে পরিষেবা, পণ্যের গুণমান এবং ডেলিভারি সম্পর্কিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত হবে।

অধিকার ও দায়িত্ব নির্ধারণ

চুক্তিপত্রে পক্ষগণের অধিকার এবং দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা উচিত। এতে প্রত্যেক পক্ষের ভূমিকা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে।

অর্থনৈতিক শর্তাবলী নির্ধারণ

প্রতিটি চুক্তিপত্রে অর্থনৈতিক লেনদেনের শর্তাবলী যেমন মূল্য, অর্থপ্রদান পদ্ধতি এবং সময়সীমা চুক্তিপত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সময়সীমা ও কার্যকরতার শর্তাবলী

চুক্তিপত্রের কার্যকারীতার সময়সীমা এবং নির্দিষ্ট কার্যপ্রণালীর শর্তাবলী চুক্তিপত্রে অন্তর্ভুক্ত থাকা অতিব উচিত।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্রে আইনগত বিষয়াবলি

আইনজীবীর মতামত
চুক্তিপত্র লিখতে গেলে একজন দক্ষ আইনজীবীর মতামত গ্রহণ করা জরুরি। এটি চুক্তির আইনি বৈধতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

স্থানীয় আইনের অনুসরণ
চুক্তিপত্র লিখতে স্থানীয় আইন এবং নিয়মকানুন অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে চুক্তির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে।

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্রের বৈধতা নিশ্চিত করা

সঠিক স্বাক্ষর ও সীলমোহর
পক্ষগণের সঠিক স্বাক্ষর এবং প্রয়োজনীয় সীলমোহর ১০০% নিশ্চিত করতে হবে। এটি ব্যবসায়িক চুক্তিপত্রের বৈধতা নিশ্চিত করে।

সাক্ষীর উপস্থিতি
চুক্তিপত্রে সাক্ষীর থাকা জরুরী ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র বাস্তবায়নে আইনি সুরক্ষা প্রদান করে।

উপসংহার

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র ব্যবসায়ের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি পক্ষগণের মধ্যে একটি সুস্থ ও স্বচ্ছ সম্পর্ক স্থাপন করতে সহায়তা করে। সঠিক পদ্ধতিতে চুক্তিপত্র লিখলে ব্যবসার সফলতা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত হয়। আর সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র লিখতে হলে একজন আইনজীবি প্রয়োজন পরবে। তাই সবাইকে একজন আইনজীবি পরামর্শ নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হইল।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)

চুক্তিপত্রে কোন ভুল হলে কি করা উচিত?

যদি কোনো ভুল বা অস্পষ্টতা থাকে, তবে তা সংশোধন করা উচিত। উক্ত ভুলটি সংশোধন করার জন্য পক্ষগুলো সম্মত হলে, একটি সংশোধন চুক্তি বা অ্যাডেন্ডাম তৈরি করা যেতে পারে।

চুক্তিপত্রের আইনি শক্তি কী?

একটি সঠিকভাবে স্বাক্ষরিত এবং আইনি শর্তাবলী পূর্ণ চুক্তিপত্র আইনিভাবে শক্তিশালী হয় এবং কোনো পক্ষ যদি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে, তবে অন্য পক্ষ আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে।

চুক্তিপত্র কি একতরফা হতে পারে?

একটি একতরফা চুক্তি, যেখানে একটি পক্ষ অন্যকে শর্তাবলী মেনে চলতে বাধ্য করে, আইনি কার্যকারিতা পেতে পারে, তবে সাধারণত ব্যবসায়িক চুক্তি দুই বা একাধিক পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে তৈরি হয়।

চুক্তিপত্রে কি সব সময় তারিখ থাকতে হবে?

হ্যাঁ, চুক্তিপত্রে তারিখ থাকা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি চুক্তির কার্যকারিতা এবং প্রযোজ্য সময় নির্ধারণে সহায়ক।

চুক্তিপত্রের জন্য কি কোনো নির্দিষ্ট ফরম্যাট রয়েছে?

ব্যবসায়িক চুক্তিপত্রের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ফরম্যাট নেই, তবে কিছু সাধারণ কাঠামো রয়েছে যা অধিকাংশ চুক্তিতেই ব্যবহার করা হয়।

চুক্তিপত্রে কি সাক্ষীর প্রয়োজন আছে?

হ্যাঁ, সাধারণত ব্যবসায়িক চুক্তিপত্রে সাক্ষীর স্বাক্ষর প্রয়োজন। সাক্ষী হিসেবে দুটি পক্ষের বাইরে কোনো নিরপেক্ষ ব্যক্তি থাকলে, তা চুক্তির আইনি বৈধতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হতে পারে। তবে, এটি সব ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক নয়, বিশেষত কিছু চুক্তি যেমন একতরফা চুক্তি বা ছোট ব্যবসায়িক চুক্তির ক্ষেত্রে।

চুক্তির শর্তাবলী পরিবর্তন বা বাতিল করা যাবে কি?

একটি চুক্তি পরে পরিবর্তন বা বাতিল করা সম্ভব, তবে এর জন্য দুই পক্ষের সম্মতি প্রয়োজন। সাধারণত, চুক্তির সংশোধন বা বাতিলের জন্য একটি অ্যাডেন্ডাম বা নতুন চুক্তির প্রয়োজন হয়। এর মাধ্যমে আগের চুক্তির শর্তাবলী পরিবর্তন করা যেতে পারে।

চুক্তি লঙ্ঘন হলে কি হবে?

চুক্তি লঙ্ঘন হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, যেমন:
মুল্য পরিশোধ: যদি কোনও পক্ষ অর্থ পরিশোধ না করে, তবে আদালতে মামলা করা হতে পারে।
সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সমাধান: বিরোধের ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা বা আদালতের রায়ে সমাধান করা যেতে পারে।
দন্ড বা জরিমানা: কিছু চুক্তিতে লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা বা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার শর্ত থাকতে পারে।

চুক্তির মেয়াদ কিভাবে নির্ধারণ করবেন?

চুক্তির মেয়াদ নির্ধারণ করার সময় সুনির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করা উচিত। চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে, এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হতে পারে অথবা নবায়ন হতে পারে যদি পক্ষগনের নতুন শর্তাবলীতে একমত হয়।

একটি চুক্তিতে কীভাবে ‘অপারগতা’ বা ‘ফোর্স মেজিওর’ শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা যায়?

ফোর্স মেজিওর শর্তটি একটি বিশেষ শর্ত যেখানে কোনো পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে দায়ী থাকবে না যদি কোন অপ্রত্যাশিত, অবশ্যম্ভাবী ঘটনা ঘটে (যেমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যুদ্ধ, বা সরকারী বিধিনিষেধ)। এই শর্তটি চুক্তির বর্ধিত বা পূর্ণকালীন বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে পারে।

চুক্তিপত্রের ভাষা কীভাবে স্পষ্ট রাখতে হবে?

চুক্তির ভাষা স্পষ্ট এবং সোজাসাপ্টা হওয়া উচিত যাতে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি বা অসম্পূর্ণতা না থাকে। আইনি ভাষার পাশাপাশি, সাধারণ ভাষাও ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে বিশেষ ধরনের আইনি শর্ত বা নিয়মাবলী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা জরুরি।

চুক্তি সম্পাদন শেষে কি পদক্ষেপ নিতে হবে?

চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে, উভয় পক্ষের জন্য একটি কপি রাখা উচিত। যেকোনো পরিস্থিতিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি রেকর্ড হিসেবে কাজে আসতে পারে। এই কপি সংরক্ষণ করা উভয় পক্ষের অধিকার সুরক্ষিত রাখে।

চুক্তির জন্য আইনজীবীর সহায়তা প্রয়োজন আছে কি?

হ্যাঁ, ব্যবসায়িক চুক্তি প্রস্তুত করার সময় একজন আইনজীবীর সহায়তা নেওয়া অতি উত্তম, বিশেষ করে যদি চুক্তিটি জটিল বা আইনি জটিলতা সৃষ্টিকারী হয়। আইনি পরামর্শ পেলে চুক্তি সঠিকভাবে তৈরি করা এবং পরবর্তীতে যে কোনো বিরোধের সম্ভাবনা কমে যায়।

চুক্তিপত্রে সাক্ষী কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

সাক্ষী চুক্তির আইনগত শক্তি বাড়ায় এবং প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।

Sharing Is Caring:

আমি জিয়ারুল কবির লিটন, একজন বহুমুখী ব্লগার, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, জীবনধারা এবং ইসলামিক বিষয় সহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখির প্রতি অনুরাগী। আমি কঠোর অন্বেষণ, অনুসন্ধান, তত্ত্বানুসন্ধান ও অনলাইনের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে আমার আকর্ষক লেখার এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ২০১৫ সাল থেকে ব্লগের মাধ্যমে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং ইতিবাচকতা দিক গুলো নির্ভুল ভাবে সবার সাথে ভাগ করে চলার চেষ্ট করছি।

Leave a Comment