গর্ভাধারনের সাথে সাথে মহিলাদের শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন হয়। গর্ভাবস্থায় সবচেয়ে সাধারণ সমস্যাগুলির মধ্যে একটি যা একজন গর্ভবতী মাকে কষ্ট দেয় তা হল বমি বমি ভাব। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের সকালে বমি বমি ভাবের সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলা হয় মর্নিং সিকনেস। আজ আমরা জানবো মর্নিং সিকনেসের প্রধান কারণ কি? গর্ভধারনের কত কতদিন পর বমি হয় ? এটি গর্ভবতী মায়ের জন্য ভাল নাকি খারাপ ? এর সমাধান কি?
পোস্ট ক্যাটাগরি | স্বাস্থ্য |
বিষয়বস্তু | গর্ভাবস্থা |
গর্ভাবস্থায় বমি হলে করণীয়, গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়, গর্ভাবস্থায় বমির ট্যাবলেট এর নাম এবং বমি দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই যদি আপনার বা আপনার পরিবারের কারো এই সমস্যা থাকলে মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিক্যালটি পড়ুন।
এক মাসে পিরিয়ড না হলে বেশিরভাগ বিবাহিত মহিলাই এটিকে গর্ভাবস্থার লক্ষণ বলে মনে করেন। কিন্তু পিরিয়ড মিস হওয়াই গর্ভধারণের একমাত্র লক্ষণ নয়। দেখা গেছে পিরিয়ড মিস না হওয়া সত্ত্বেও অনেক মহিলা গর্ভধারণ করেছেন। পিরিয়ড ছাড়াও, বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ঘটনা রয়েছে যা গর্ভাবস্থাকে নির্দেশ করে তার মধ্যে একটি হলে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
গর্ভাবস্থায় মেয়েদের বমি বমি ভাব
বমি বমি ভাব বা বমি গর্ভাবস্থায় মেয়েদের একটি সাধারণ সমস্যা। তবে মনে রাখতে হবে এই সময়ে খাবারের প্রতি ঘৃণা ভাব আসা এবং মাঝে মাঝে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে এই সমস্য হয়ে থাকে। এর প্রধান কারণ একধরনের হরমোন । গর্ভধারণের পরপরই মেয়েদের শরীরে হরমোন বৃদ্ধির প্রভাব দেখা যায়। বিভিন্ন সময় হরমোন ওঠানামা করে এবং সেই অনুযায়ী এই প্রতিক্রিয়া দেখায যায়।
গর্ভবতী হওয়ার কতদিন পর বমি হয়
এটা অনেকেরই প্রশ্ন যে গর্ভাবস্থার কত দিন পর বমি হয়। গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা বমি সাধারণত চতুর্থ সপ্তাহ থেকে হয়। কারও কারও কাছে এটি আগে হতে পারে। বিস্তারিত ভাবে বলতে গেলে বলতে হয়- সাধারনত গর্ভবতী হওয়ার চতুর্থ সপ্তাহের পর থেকে অর্থাৎ ২৮ দিন পর থেকে বমি বমি ভাব বা বমি হয় । তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এর আগেও হতে দেখা যায়। এই সমস্যা ১২ থেকে ১৮ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে এই সমস্যা প্রসবের আগ পর্যন্ত থেকে যায়।
আরও পড়ুনঃ
- গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
- গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
- গর্ভাবস্থার ৮ম মাসে শারীরিক পরিবর্তন কেমন হয় দেখে নিন।
গর্ভাবস্থায় বমি হওয়ার কারণ
আমরা আগেই বলেছি, গর্ভাবস্থায় বমি হওয়া খুবই স্বাভাবিক এবং স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তাই আপনাকে এটি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। যাইহোক, কিছু কারণ এই বমি বমি ভাব প্রভাবিত করে। চলুন দেখে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় বমি হওয়ার প্রধান কারণ গুলো-
১। গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মর্নিং সিকনেস বা বমি হয়।
২। গর্ভাবস্থায় যদি টেনশনে থাকেন বা খুব বেশি টেনশনে করে থাকেন তাহলেও বমি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৩। গর্ভাবস্থায় অধিক চর্বিযুক্ত খাবার খেলেও বমি বমি ভাব বাড়তে পারে বা বমি হতে পারে।
৪। হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণ থাকলে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বমি হতে পারে।
৫। আপনার যদি সকালের অসুস্থতা অর্থাৎ মর্নিং সিকনেস পারিবারিক ইতিহাস বা পরিবারের কারো থাকে তবে আপনারও এই সমস্যা হতে পারে।
৬। ত্রিশ বছর বয়সের পর গর্ভধারণ করলে বমি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৭। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে বমি হতে পারে।
৮। এমনকি আপনার ওজন বেশি হলেও এই সমস্যা হয়।
৯। অনেকে বলে থাকেন যে মেয়ে শিশুর গর্ভবতী হলে মর্নিং সিকনেসের সম্ভাবনা বেশি।
১০। অপুষ্টি গর্ভবতী মহিলাদের বমির অন্যতম প্রধান কারণ। একজন মহিলার গর্ভাবস্থায় অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি পুষ্টির প্রয়োজন হয়। গর্ভাবস্থায় সঠিক ও পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেলে বমির সমস্যা প্রবল হতে পারে।
১১। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ভাজা খাবার বা তৈলাক্ত খাবার খেলে বমির সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
১২। জেনেটিক সমস্যা আপনার পরিবারের কারো এই সমস্যা থাকলে আপনার এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
১৩। কারো যদি মোলার প্রেগন্যান্সি থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় বমির সমস্যা তীব্র হতে পারে।
১৪। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, গর্ভে কন্যাশিশু থাকলে মর্নিং সিকনেস বা বমি হওয়ার সমস্যা বেশি হয়।
১৫। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজনের কারণে সকালের অসুস্থতা বা বমি বমি ভাব হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় বিটা এইচসিজি হরমোন
গর্ভাবস্থায় মায়েদের এক ধরনের হরমোনের প্রভাব বৃদ্ধি পায়, সেটি হল বিটা হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডট্রপিন। এই হরমোন কে মেডিক্যাল ভাষায় সংক্ষেপে বলা হয় বিটা এইচসিজি। যখন এই বিটা এইচসিজি হরমোন বৃদ্ধি পায় তখন তার প্রভাবে গর্ভাবতি মায়েদের খাওয়ায় অরুচি, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব হওয়া এবং মাঝে মধ্যে বমি ও হয়ে থাকে। আর এটাকে বলা হয় মর্নিং সিকনেস। তবে সমস্যা যদি সাভাবিক পর্যায়েই থাকে তাহলে চিন্তার কিছু নেই সেটি খুব মারাত্মক নয়। তবে যদি বমির মাত্রা খুব বেশি বেড়ে যায় তাহলে মারাত্মক পর্যায়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় সকালে বমি বমি ভাব বেশি হয়, তাই একে মর্নিং সিকনেসও বলা হয়। এই সকালের অসুস্থতা প্রায় ৮৫% শতাংশ গর্ভবতী মহিলাদের হয়। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে মর্নিং সিকনেস বেশি দেখা যায় তারপর ১২ সপ্তাহ বা ১৮ সপ্তাহের পর তা কমে যায়। এই সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গর্ভাবস্থায় বমির মাত্রা বেড়ে গেলে অর্থাৎ দিনে দুই থেকে তিনবার বা তার বেশি বমি হলে শরীরে নানা সমস্যা শুরু হয়। শরীরের ওজন ৫ শতাংশের বেশি কমে যায়। যদি ২০ সপ্তাহ বা ৪ থেকে সারে ৪ মাস পরও বমি হতে থাকে তবে তাকে হাইপারমেসিস গ্র্যাভিডারাম বলে।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায়
বমি বমি ভাব নিয়ন্ত্রণের উপায়
১। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বমি বমি ভাব বেশি হয় এবং পেটে ব্যথাও হয় সবচেয়ে বেশি। সেই সময়ে তরল কিছু পান করলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই সকালে চা-কফি না খেয়ে শুকনো খাবার খেতে পারেন। যেমন, সামান্য টোস্ট, বিস্কুট বা মুড়ি ইত্যাদি। এছাড়াও রাতে শোয়ার আগে শুকনো খাবার খেলে সকালে বমি ভাব কমে যাবে।
২। যদি বশি বমি বমি ভাব হয়ে থাকে একসাথে অতিরিক্ত খাবার খাবেন না। এতে বমি হতে পারে। তাই প্রয়োজনে অল্প খান এবং দুই-তিন ঘণ্টা পর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
৩। বমি বমি ভাব নিয়ন্ত্রণের জন্য অ্যাভোকাডো, কলা বা চর্বিহীন মাংস খান। এতে সমস্যা কমবে।
৪। গর্ভাবস্থায় চর্বিযুক্ত, বেশি মশলাদার সুসাধু খাবার এবং ভাজা পোরা খাবার খাওয়া ঠিক নয়। কার এই জাতীয় খাবার বেশি খেলে বদহজম ও বমি হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। সে সব খাবার ছাড়তে না পারলে খুব কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৫। আপনি বেশি করে পানি এবং তরল খাবার খেতে পারেন। খাবার আগে পানি পান করুন কিন্তু খাবার খাওয়ার সময় পানি পান করবেন না তার বদলে খাবার খাওয়ার ২০ মিনিট পর পানি পান করুন।
৬। বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে এমন জিনিসগুলি এড়িয়ে চলুন।
৭। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। তবে সারাদিন শুয়ে থাকবেন না। মাঝে মাঝে হালকা ইনডোর এবং আউটডোর কার্যকলাপ করুন অর্থাৎ একটিু হাটাহাটি পারিবারিক আড্ডার ব্যবস্থা করতে পারেন।
৮। বমি বমি ভাব বা বমি হলে আদা চা বা আদা ফ্লেক্স খান। অথবা পাতি লেবু খেতে পারেন। অথবা লেবুর পাতার গন্ধ নিতে পারেন এটিও কাজ করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় বমি হলে শিশুর ক্ষতি হয় কি?
গর্ভাবস্থায় বমি করা শিশুর জন্য ক্ষতিকর কি না, তা নিয়ে অনেকেই ভাবতে পারেন। উত্তর হল ‘না’। গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব শিশুর কোনো ক্ষতি করে না, তবে কিছু বিশেষজ্ঞ বলেছেন গর্ভাবস্থায় পরিমিত পরিমাণে বমি করা শিশুর জন্য ভালো। তাই গর্ভাবস্থায় বমি হলে ঘাবড়ে যাবেন না। এটি একটি খুব স্বাভাবিক এবং সাধারণ প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুনঃ
- গর্ভাবস্থায় আপনি ৮তম মাসে যে অভিজ্ঞতা ও সমস্য গুলির সম্মুখীন দেখে নিন।
- গর্ভবস্থার ৭ম মাসে শিশু শুনতে ও লাফতে পারে
- গর্ভাবস্থায় যে কাজ করা একেবারেই করা ঠিক নয়
গর্ভাবস্থায় বমির জন্য ট্যাবলেটের নাম
নীচে গর্ভাবস্থায় কিছু অ্যান্টি-বমিটিং ট্যাবলেটের নাম দেওয়া হল যা গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব এবং বমি বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
সতর্কতা: গর্ভাবস্থায় কোনো ওষুধ খেতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। কারণ অনেক সময় ওষুধ গর্ভের শিশুর ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই সতর্কতা অবলম্বন করা প্রতিটি মায়ের জন্য অনন্ত জরুরী।
Name → Company → Price
Pyridox 20 → Incepta কম্পানি → খুচরা মূল্য ৯ টাকা
Vertina D-20 →Square কম্পানি → খুচরা মূল্য ৫ টাকা
Dicliz Plus 20 →Aristopharma কম্পানি → খুচরা মূল্য ৮ টাকা
Vomix DR → Beximco কম্পানি → খুচরা মূল্য ৫ টাকা
Emedox → Popular কম্পানি → খুচরা মূল্য ৯ টাকা
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করার খাবার
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা বমিভাব দূর করার জন্য কিছু পরীক্ষিত ঘরোয়া প্রতিকার নিচে উল্লেখ করা হল:
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে পানি
পানি এমন একটি জিনিস যা আপনি যত বেশি পান করবেন তত ভাল এবং পানি সমস্ত রোগের জন্য খুব উপকারী। আপনি যদি বার বার বমি করে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় লবণ ও খনিজ পদার্থের ঘাটতি হয় এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই শরীরে প্রয়োজনীয় লবণ ও খনিজ পদার্থ ধরে রাখতে প্রচুর পানি পান করা উচিৎ।
খাওয়ার নিয়ম
বমি বমি ভাব বা বমি হলে ১-২ গ্লাস পানি পান করুন। অথবা বমির পর স্যালাইন খেতে পারেন। অথবা বমি বমি ভাব হলে কয়েক টুকরো বরফও খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে আদা
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব এবং বমি বন্ধ করার জন্য আদা খুবই কার্যকরী একটি ওষুধ। আদার স্বাদ বা গন্ধ আপনাকে বমি বমি ভাব এবং বমি বন্ধ করতে সাহায্য করবে। আদা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা দ্রুত হজমে সাহায্য করে এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে। বমি বমি ভাব দূর করতে আদা খেতে পারেন।
খাওয়ার নিয়ম
আদা চা পান করতে পারেন। সকালে পানিতে আদা সিদ্ধ করে ছেঁকে নিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে পান করুন।
অথবা বমি বমি ভাব বা বমি হলে কয়েক টুকরো আদা চিবিয়ে খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে মেনথল
মেনথল খুবই কার্যকরী একটি ভেষজ। যা পেটের যেকোনো সমস্যায় ভালো কাজ করে। এটি বমি বমি ভাব এবং পেটের অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে।
খাওয়ার নিয়ম
আপনি পানি ফুটিয়ে এবং শুকনো মেন্থল এবং মধু যোগ করে মেন্থল চা তৈরি করতে পারেন। সকালে এই মেন্থল চা পান করতে পারেন।
এছাড়াও আপনি মেন্থল পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে কমলা লেবু
বমি বমি ভাব দূর করতে কমলা খুব ভালো ফল। যার মধ্যে রয়েছে সাইট্রিক এসিড নামক রাসায়নিক পদার্থ। কমলার রস বা সুগন্ধ গ্রহণ আপনার বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কমলালেবু গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
খাওয়ার নিয়ম
বমি বমি ভাব কমাতে কমলার গন্ধ বা কমলার রস পান করতে পারেন। তা ছাড়া বেশি করে কমলা খেলে শরীরে পুষ্টিগুণ বাড়বে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে দারুচিনি
যদিও আমরা রান্নার মসলা হিসেবে দারুচিনি ব্যবহার করি, কিন্তু বমি বমি ভাব দূর করার জন্য এটি খুবই উপকারী একটি উপাদান।
খাওয়ার নিয়ম
অল্প পানিতে কিছু দারুচিনি ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা হয়ে গেলে এক চা চামচ মধু যোগ করুন এবং আপনার দারুচিনি চা তৈরি করুন। এখন যখনই বমি ভাব অনুভব করবেন তখনই দারুচিনি চা পান করুন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে লেবু
লেবু বমি উপশমের অন্যতম কার্যকরী উপাদান। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি এবং খনিজ রয়েছে যা বমি বমি ভাব এবং বমি বন্ধ করতে সাহায্য করে।
খাওয়ার নিয়ম
বমি বমি ভাব হলে লেবুর পাতা শুকিয়ে নিতে পারেন বা কয়েক টুকরো লেবু খেতে পারেন। বমির পর লেবুর রস খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে লবঙ্গ
লবঙ্গ একটি মশলা হিসাবেও ব্যবহৃত হয় এবং এর কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি বিভিন্ন রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। লবঙ্গ খাওয়া গর্ভবতী মহিলাদের ডায়রিয়া, হজমের সমস্যা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
খাওয়ার নিয়ম
আপনি যখনই বমি বমি ভাব অনুভব করেন তখন আপনি আপনার মুখে কয়েকটি লবঙ্গ চিবাতে পারেন। অথবা গরম পানিতে 2-3 লবঙ্গ দিয়ে পান করতে পারেন বা চা খাওয়ার সময় 2-3 লবঙ্গ দিয়ে পান করতে পারেন। এটি দ্রুত বমি বমি ভাব থেকে মুক্তি পেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে দই
বমি বমি ভাব দূর করতে দই খেতে পারেন। এতে প্রোবায়োটিক বা উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা হজমে সাহায্য করে এবং বমি বমি ভাব এবং পেটের অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
খাওয়ার নিয়ম
আপনি যখন খুশি দই খেতে পারেন। অথবা বমি বমি ভাব বা বমি হলে ঠান্ডা দই খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে বাদাম
বাদাম হজমের উন্নতিতে সাহায্য করে এবং পেটের অস্বস্তি এবং বমি বমি ভাব দূর করতে কার্যকর। কারণ বাদামে উচ্চ প্রোটিন পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
খাওয়ার নিয়ম
দিনে যে কোনো সময় ২-৩টি বাদাম খেতে পারেন। অথবা রাতে ঘুমানোর আগে বা সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব দূর করতে মৌরি বীজ
মৌরির বীজ বমি বমি ভাব এবং বমি দূর করার জন্য একটি সুপরিচিত উপাদান। এর সুগন্ধ বেশ আরামদায়ক যা বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
খাওয়ার নিয়ম
যখনই আপনি বমি বমি ভাব অনুভব করবেন, আপনি বমি বমি ভাব থেকে মুক্তি পেতে কিছু মৌরির বীজ চিবিয়ে খেতে পারেন। মৌরি চা বানিয়ে পানও করতে পারেন। মৌরির বীজ পানি দিয়ে গরম করে, ছেঁকে এবং সামান্য মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। এটি বমি বমি ভাব উপশম করবে।
আমাদের কথা
গর্ভাবস্থায় দিনে দুবারের বেশি বমি হলে রোগীকে পানিশূন্য ও দুর্বল করে দিতে পারে। তাই ক্রমাগত এবং অতিরিক্ত বমি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করারও প্রয়োজন হতে পারে। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে পাঁজরের নিচে তীব্র ব্যথার সাথে বমি হওয়া প্রি-এক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ। এছাড়া বমির পাশাপাশি পেটে ব্যথা এবং উচ্চ তাপমাত্রা থাকলে তা সংক্রমণের কারণেও হতে পারে। তাই যে কোনো অবস্থাতেই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি হলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিতে হবে।
গর্ভধারণের পর মাসিক বন্ধ হয়ে যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় যোনিপথে রক্তপাত হয়। খুব বিরল ক্ষেত্রে, এটাও শোনা যায় যে গর্ভবতী মহিলাদের মাঝে মাঝে মাসিক রক্তপাত হয়। তবে ভালো করে জেনে নিন গর্ভাবস্থায় যোনিপথে রক্তপাত কখনোই মাসিক হয় না, বরং অন্য কিছু হতে পারে।
গর্ভধারণের ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই অনেক নারীর স্তনে ব্যথার পাশাপাশি ভারী হয়ে যায়। তবে একজন গর্ভবতী মাকে ভালো ভাবে বুঝতে ১ মাস সময় লাগে।
গর্ভাবস্থার ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে, অনেক মহিলাই স্তনের কোমলতা, সেইসাথে ভারীতা অনুভব করেন। দিনের যে কোনো সময় বমি হওয়া, বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বমি হওয়া, গর্ভাবস্থার লক্ষণ হতে পারে। এটি গর্ভধারণের ৩০ দিন পরে ঘটে। এ সময় ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় প্রাকৃতিক বা সাভাবিক মিলনে কোন সমস্যা নেই। এটি অনাগত শিশুর ক্ষতি করবে না। কারণ গর্ভে থাকা শিশুটি তলপেটের এবং জরায়ুর শক্তিশালী পেশী দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। এটি অ্যামনিওটিক তরল দ্বারা বেষ্টিত। আসলে, যখন নির্ধারিত তারিখ আসে, ডাক্তাররা মিলনের পরামর্শ দেন। তবে গর্ভবতী নারীর কোন সমস্যা থাকলে না করাই ভালো।