মোবাইল হ্যাং হলে করনীয় ২০২১

মোবাইল হ্যাং হলে করনীয় ২০২১

এ যুগে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিষ্টেমের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। সেই সব কিছুর ভালোর সাথে খারাব দিকও থাকে অপারেটিং সিষ্টেম ও এর বাইরে নয় অনক সময় এই প্রিয় অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা কিছু সমস্যায় পরি। মোবাইল ফোনের প্রতি মানুষের নির্ভরতা এতটাই বেড়ে গেছে যে এখন কেউ এই ডিভাইস ছাড়া একটি দিন পার করার কথা ভাবতেও পারে না। মোবাইল ফোন কিছুক্ষণ ঠিকমত কাজ না করলে অনেকেই অধৈর্য হয়ে পড়ে। মোবাইল ফোন একটানা ব্যবহার করতে করতে কখনো তা ‘হ্যাং’ বা অচল হয়ে যেতে পারে। সাধারণত বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন, গেম ও ভিডিও মেমোরি ফোনের অনেক জায়গা দখল করে নিলে মোবাইল ফোন ‘হ্যাং’ হতে শুরু করে। সেই সব প্রাধান সমস্যার গুলির মধ্যে একটি হল মোবাইল হ্যাং হয়ে যাওয়া । কিছু পদ্ধতি আনুসরন করলে আমরা এর থেকে মুক্তি পেতে পারি। তার আগে চলুন জেনে নিই আমাদের এই প্রিয় অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলটি কেন হ্যাং হয়। হ্যাং হতে পারে এমন কি কি কারন রয়েছে। এবং মোবাইল হ্যাং হলে করনীয় কি?

মোবাইল হ্যাং হলে করনীয় ২০২১
মোবাইল হ্যাং হলে করনীয় ২০২১

কি কি কারনে মোবাইল হ্যাং হয় ?

১. প্রথমত অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল হ্যাং হয়ে যাওয়ার প্রাধান কারন দেখা গেছে মোবাইলের স্পেস থাকা। অর্থাৎ আপনি যখন একই সময়ে অনেক গুলি আপ্লিকেশন ব্যবহার করেন তখন প্রয়োজনের তুলনায় মেমরি (RAM) কম হলে মোবাইল হ্যাং হয়ে যেতে পারে পারে।

২. ২য় কারনটিও একই বলতে পারেন যদি আমরা মেমোরি কার্ড (Memory card /External Memory) এর পরিবর্তে ফোন মেমরিতে (Internal Memory/ROM) যথেচ্ছ পরিমানে অ্যাপ্লিকেশন ইনষ্টল (Install) করি তাহলে  রোম (ROM) এর ফুল হয়ে যায় বা এপলিকেশন চালু করার মত যায় কমে যায় আর এই রোম ঘাটতির কারনে ফোন হ্যাং হতে পারে।

৩. যদি মোবাইল ফোনের cookies, caches, log files সঠিক সময়ে পরিষ্কার না করা হয়। তবে এগুলি মেমরি জ্যাম করে মোবাইল হ্যাং হওয়ার কারন হয়ে দাড়ায়।

৪। মোবাইল এর র‌্যাম রোম বা মেমোরি তুলনায় যদি বড় বা ভারি অ্যাপলিকেশন বা গেম ব্যবহার করলেও মোবাইল হ্যাং হয়।

৫। মোবাইল ফোনে ভাইরাজ জনিত কারনে বা ব্যাকগ্রউন্ট এ অন্য কোন এপলিকেশন চালু থাকা আবস্থায় যদি আমরা অন্য কোন এপলিকেশন চালু করি তাহলেও এই সমস্যা হতে পারে বা হ্যাং হয়ে যেতে পারে।

এবার আসি মোবাইল ঘন ঘন হ্যাং কি করবেন বা এই সমস্যার সমাধান কি কি রয়েছে চলুন শুরু করা যাক। হ্যাং হওয়ার কারন দেভে হয়তো বুঝতে পেরেছেন কিভাবে সমাধান করতে হবে তারপরও আমি স্টেপ বাই স্টেপ বলছি জেনে রাখুন কাজে আসবে।

আরও পড়ুনঃ মোবাইল ফোনের দাম ২০২১

মোবাইল হ্যাং হলে করনীয়

১। কোন অ্যাপ ইন্সটল (Install ) করার প্রয়োজন হলে সেটা আপনার মেমোরী কার্ডে ইন্সটল (Install ) করেন যথা সম্ভব চেষ্টা করেন আপনার ফোন মেমোরি ফাকা  রাখার। এক কথায় যদি আপনি কোন app install করে থাকেন তাহলে সেটা phone memory তে ইন্সটল না করে memory card এ করুন। ফোন মেমোরি ফাঁকা রাখতে পারলেই আপনার ফোন হ্যাক হওয়া থেকে মুক্তি পাবে। 

২। আপনার ফোনে যদি অপ্রয়োজনীয় কোন এপ্লিকেশন ইনস্টল করা থাকে তাহলে সেগুলো আনইন্সটল করে দিন।  প্রয়োজন ছাড়া অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করে রাখা থেকে বিরত থাকুন । যে এপ্লিকেশন আপনার প্রয়োজন নাই সেগুলো রেখে কেনই বা আপনি ফোনটা কে ভারী করে রাখবেন।

৩। আপনার ফোন এর (RAM) যদি  কম হয় বা ২ জিবির  তাহলে বড় অ্যাপ্লিকেশন গুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। ভারি অ্যাপ্লিকেশন গুলোর  পরিবর্তে লাইট অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারেন।  যেমন ফেসবুক লাইট,  ইমু লাইট,  ফেসবুক মেসেঞ্জার লাইট,  ইত্যাদি।

৪। লক্ষ রাখুন ফোনে একই সঙ্গে অনেকগুলো অ্যাপ্লিকেশন চালু আছে কিনা। অনেক ফোনে দেখা যায় অপ্রয়োজনীয় কিছু অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড চালু হয়ে থাকে যার কারণে আপনার ফোনের রেম (RAM)  ফুল হয়ে যায়।  আর আপনার প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন চালু করার সময় আপনার শখের এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটি  হ্যাং হয়ে যায়।

৫। কোন এপ্লিকেশন ব্যবহার করার পরে রাম ফাঁকা করার জন্য “Advanced task killer”, “Easy task killer” এই অ্যাপস গুলোর মধ্যে একটি ব্যবহার করতে পারেন । আশা করি আর সমস্যা হবে না।

৬। ওপেন সেটিং অপশনে যান এখান থেকে সেখানে কতটুকু মেমোরি খালি রয়েছে । ভিডিও ছবি অ্যাপস কতটুকু জায়গা দখল করে আছে তা দেখে নিন  অপ্রয়োজনীয়’ ফাইল ডিলিট করে দিন।

৭। এবার আপনার ফোনের সেটিং এ যান সেখান থেকে অ্যাপস অ্যাপ্লিকেশন অপশনে যান। এবার আপনার ফোনে থাকা  ভারী বা বড় অ্যাপ্লিকেশনগুলো নির্বাচন করুন। সেখান থেকে অ্যাপসের মেমোরি ব্যবহার  অপশনে মেমোরি কার্ড করে দিন এসডিকার্ড করে দিন।  এখন থেকে যে অ্যাপসটি  এস ডি কার্ড করে দিলেন সেটি আর আপনার ফোন মেমোরির জায়গা দখল করবে না বা আপনার ইন্টারনাল স্টোরেজ ফুল হবে না এতে করে আপনার ফোন ফ্রি থাকবে।  হ্যাং হওয়া থেকে মুক্তি পাবে।

৮। কোন এপ্লিকেশন যদিও  অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে তাহলে তো আনইন্সটল করে দিতে পারেন এছাড়াও মোবাইলে থাকে ভিডিও অডিও পিকচার ইত্যাদি অপূরণীয় ফাইলগুলো ডিলিট করে মেমোরি কার্ড ফাঁকা করে রাখুন।  এতে করে অনেক খানি আপনার ফোন হ্যাক হওয়া থেকে মুক্তি পাবে।

৯। আবার অনেক সময় মেমোরি কার্ডের জন্য বা এসডি কার্ডের জন্য মোবাইল হ্যাং হতে পারে।  তাই যদি হঠাৎ করে হ্যাং  হওয়া সমস্যায় ভোগেন।  তাহলে আপনার মেমোরী কার্ডটি কিছুক্ষণ সময়ের জন্য খুলে ব্যবহার করে দেখতে পারেন।  কারণ মেমোরি কার্ডে ভাইরাসজনিত কারণে বা অন্য কোনো কারণে যদি সোলো হয়ে যায়।  সেক্ষেত্রেও ফোন হ্যাক করতে পারে।

১০।  স্মার্ট ফোনে বেশি অ্যান্টিভাইরাসের প্রয়োজন হয় না। তাই অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল না করাই ভালো। এতে ফোনের র‍্যাম বেশি ব্যবহার হয়।

১১।  মোবাইলে ভালো মানের র‍্যাম ক্লিনার ব্যবহার করুন। তবে খুব বেশি র‍্যাম ফুল না করার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

১২।  মোবাইল কেনার সময় আপনাকে অন্যান্য ফিচারের পাশাপাশি র‍্যামের দিকে লক্ষ বেশি দিতে হবে। বর্তমান সময়ে ২ GB জিবি র‍্যামের নিচে মোবাইল না কেনাই ভালো।

১৩।  একটি অ্যাপ বন্ধ করার সময়, আপনাকে এটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। আপনি যদি হোম বোতাম টিপে এটি বন্ধ করেন তবে এটি পটভূমিতে চলতে থাকবে। তাই বেশি সময় লাগলেও, আপনাকে অপশন থেকে এটি বন্ধ করতে হবে।

যদি মোবাইল হ্যাং হয়, তাহলে হোম বাটন চেপে দ্রুত বেরিয়ে আসুন। রিসেন্ট থেকে সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনের তালিকা সাফ করুন। অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেটিংসে গিয়ে অ্যাপসে যান। সেখান থেকে চলমান অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে যান এবং সমস্ত অপ্রয়োজনীয় চলমান অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করুন। আর যদি এমন হয় যে মোবাইল টা হ্যাং করার পর সাড়া দিচ্ছে না, তাহলে কিছুক্ষণের জন্য মোবাইল ছেড়ে দিন। অপ্রয়োজনে ডিসপ্লেতে এলোমেলোভাবে স্পর্শ করবেন না। তাহলে আরো খারাপ হবে। এটি কাজ করছে কিনা তা দেখতে 2 মিনিটের পরে এটি স্পর্শ করুন। যদি না হয়, ব্যাটারি খুলুন এবং এটি আবার চালু করুন। 

আরও পড়ুনঃ How to unlock your Android device

শেষ কথা

সব ইলেকট্রিক ডিভাইস পুরনো হয়ে গেলে তার নতুনের মতো কাজ করে না। মোবাইল ফোনের বিকল্প নয়।  এছাড়া অ্যাপ্লিকেশন কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত অ্যাপ্লিকেশনের করতেছে অ্যাপ্লিকেশনগুলো দিন দিন বড় হয়ে যাচ্ছে।  এতে করে এবং এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে তাই মোবাইল কোম্পানি গুলো  তাদের ফোনের র‌্যাম রোম বেশি করে বাজারে নিয়ে আসছে।  তাই আপনি চাইলেও আপনার পুরনো  মোবাইল ফোনটি দিয়ে আপডেট অ্যাপস গুলো ব্যবহার করতে পারবেন না।  যেহেতু আপনার ফোনের র‌্যাম কম আপনি এগুলো ব্যবহার করতে পারেন না।

প্লে স্টোর অ্যাপস ডাউনলোড ২০২১

Sharing Is Caring:

আমি জিয়ারুল কবির লিটন, একজন বহুমুখী ব্লগার, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, জীবনধারা এবং ইসলামিক বিষয় সহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখির প্রতি অনুরাগী। আমি কঠোর অন্বেষণ, অনুসন্ধান, তত্ত্বানুসন্ধান ও অনলাইনের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে আমার আকর্ষক লেখার এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ২০১৫ সাল থেকে ব্লগের মাধ্যমে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং ইতিবাচকতা দিক গুলো নির্ভুল ভাবে সবার সাথে ভাগ করে চলার চেষ্ট করছি।

Leave a Comment