কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

আজকে আমরা আলোচনা করছি কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম প্রসঙ্গে শুরুতে আমার কৃমি সম্পর্ক জেনে নেই। যদিও স্বাস্থ্য বিভাগের এই পোস্টির শিরোনামটি কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম  তারপর এই পোস্টে আমার কৃমি সম্পকৃত সব ধরনের আলোচনা যেমন সংক্রমন থেকে শুরু করে বাচার উপায় পর্যন্ত সব করেছি । আপনি বিস্তারিত ধারনা পেতে সম্পুর্ন পোস্টটি পড়ুন।

কৃমি

কৃমি আকারে খুবই ছোট। প্রায় অদৃশ্য। কিন্তু আপনি জেনে অবাক হবেন যে এই ধরনের কৃমি গুলো মানুষের অন্ত্র থেকে প্রতিদিন ০.২ মিলিলিটার রক্ত শোষণ করে ফেলে। আর যদি শরীরে অনেক কৃমি থাকলে প্রতিদিন কত পরিমাণে রক্ত যাবে একবার ভেবে দেখুন। কৃমি ফলে শিশুরা অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতায় ভোগে। বড়দেরও কম কষ্ট হয় না।

কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

এছাড়া কৃমির কারণে অ্যালার্জি, ত্বকে চুলকানি, শুষ্ক কাশি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে। অনেক সময় কৃমি অন্ত্রের নালীতে আটকে যায় এবং বড় ধরনের জটিলতার সৃষ্টি করে। তাই কৃমির সংক্রমণ একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা।

কৃমি থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমেই জানতে হবে কেন এমন হয়? নোংরা পরিবেশ, অনিরাপদ পানীয় জল, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, খালি পায়ে হাঁটা কৃমির সংক্রমণের জন্য দায়ী।

ওষুধের মাধ্যমে কৃমি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় রয়েছে। কিন্তু ভুল ধারণার ভয়ে অনেকেই কৃমির ওষুধ খান না। বাচ্চাদের খাওয়াতে চায় না। কিন্তু ওষুধের নিয়ম মেনে এবং কিছু সহজ উপায় অনুসরণ করে সহজেই কৃমি দূর করা যায়।

কৃমি কি ক্ষতি করে?

কৃমি একটি পরজীবী যা মানবদেহে বসবাস করে। এরা সাধারণত মানুষের অন্ত্রে বাস করে। একই সময়ে, তারা মানবদেহ থেকে পুষ্টি এবং রক্ত শোষণ করে প্রজনন করে। আমরা ইতিমধ্যে জানি যে কৃমি একটি ক্ষতিকারক পরজীবী। এতে মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কৃমির কারনে মানুষের শরীরে কি কি সমস্যা হতে পারে তা নিচে দেখুন:

১। বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া

২। রক্তাল্পতা

৩। দুর্বল লাগছে

৪। পেটে ব্যথা

৫। ডায়রিয়া

৬। নার্ভাস ক্ষুধাহীনতা

৭। ওজন কমানো

৮। পেট ফাঁপা

৯। বদহজম

১০। ক্ষুদ্রান্ত্রকে বন্ধ করে দেওয়া

১১। অন্ত্রনালিকে ছিদ্র করা

১২। জন্ডিস

আমাদের আরও পোস্ট পড়ুনঃ

কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

দুই বছরের অধিক বয়সী সকলের জন্য কৃমির ওষুধের ডোজ সবার একই। অর্থাৎ আপনার আড়াই বছরের বাচ্চারাও আপনি যে পরিমাণ ওষুধ খাবেন, তারাও একই পরিমাণ ওষুধ খাবেন। তাই এ নিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না। বাড়ির সবাই মিলে একই দিনে কৃমির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম।

কৃমি থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ।
সুস্থ মানুষ বা শিশুরা চার থেকে পাঁচ মাস অন্তর কৃমির ওষুধ সেবন করলে ক্ষতি নেই। আজকাল, দুই বছরের কম বয়সী শিশুদেরও কৃমির ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে, তবে শিশুদের খাওয়ানোর পূর্বে প্রথমে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

বাচ্চাদের কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

কৃমি একটি নিয়মিত সমস্যা। শিশুদেরও এই সমস্যা হয়ে থাকে। সেজন্য শিশুদেরকেও নিয়মিত কৃমির ঔষধ খাওয়াতে হয়। এক্ষেত্রে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খাওয়াতে হবে।

স্কুলগামী ৯০% শিশু কৃমি রোগে ভোগে। এর মধ্যে গোলকৃমির প্রকোপ বেশি। এই কৃমিগুলি অন্ত্রে বাস করে এবং শিশু খাদ্যের বেশিরভাগ পুষ্টিকর খাবার তারাই খেয়ে ফেলে। তাই আক্রান্ত শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগে।

যেসব শিশু খালি পায়ে পায়খানা করে এবং খালি পায়ে মাঠে ঘুরে বেড়ায় তাদের পায়ের তলায় হুকওয়ার্ম শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এসব কৃমি রক্ত চুষে খেয়ে ফেলে, ফলে শিশুদের রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। একটি শিশুর পায়খানার রাস্তায় প্রায়ই সুই কৃমি নামে এক ধরনের ছোট কীট দেখা যায়। আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত খিটখিটে হয়। কৃমি রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ক্ষুধা হ্রাস, পেট ফোলাভাব, দুর্বলতা, ফ্যাকাশে হওয়া, বমি বমি ভাব, বা অবিরাম পেট খারাপ হওয়া।

আমাদের আরও পোস্ট পড়ুনঃ

কৃমির ওষুধের নাম কী?

প্রাপ্ত বয়স্ক বা শিশুরা যদি সুতা কৃমি বাদে অন্য কৃমিতে আক্রান্ত হয় তবে মেবেনডাজল ১০০ মিলিগ্রামের একটি বড়ি ১২ ঘণ্টা পরপর তিন দিন বা অ্যালবেনডাজল ৪০০ মিলিগ্রাম একটা বড়ি বা পিপেরাজিন ৪ গ্রাম একটি বড়ি খাওয়াতে হবে। সুতা কৃমি হলে মেবেনডাজল ১০০ মিলিগ্রাম বা অ্যালবেনডাজল ৪০ মিলিগ্রাম বা পিপেরাজিন ৪ গ্রাম একটি বড়ি খাওয়াতে হবে। তিন দিন খাওয়ার পর দুই সপ্তাহ পার হলে আরও একটি বড়ি খেতে হবে।

কৃমির ওষুধ
কৃমির ওষুধ

মনে রাখবেন ক্রিমের ওষুধের জন্য শীত বা গ্রীষ্ম কে কোন সময়ে খাওয়া যায়। এটি যে কোনো সময় খাওয়ানো যেতে পারে, এতে শিশুর কোনো ক্ষতি হয় না। জেনে রাখা ভালো যে বিভিন্ন প্রজাতির কৃমি শিশুদের শরীরে বিভিন্ন বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

শিশুদের কৃমির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ক্ষুধা হ্রাস, আয়রনের ঘাটতি এবং রক্তশূন্যতার কারণে দুর্বলতা, বৃদ্ধি রোধ এবং অপুষ্টি, পেট ফাঁপা এবং ডায়রিয়া। কৃমির কারণে অ্যালার্জি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট এবং কাশি হতে পারে।

ডা. মহসীন কবির – জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক – ইনচার্জ,ইনস্টিটিউট অব জেরিয়েট্রিক মেডিসিন।

কৃমি কেন হয়?

মনে রাখবেন এমনি এমনি পেটে কিন্তু কৃমি হয়না। এর নির্দিষ্ট কিছু কারণও রয়েছে। কৃমি বিভিন্ন উপায়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে বংশবৃদ্ধি করে। কৃমির ডিম বাতাস, বাথরুম, খাবার, পানি, দরজার হাতল, প্রাণীর শরীর ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে নাক, মুখ ও মলদ্বার দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। কৃমির লার্ভা মানুষের ত্বকের মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করতে পারে। শরীরে প্রবেশ করার পর, তারা ব্যাপকভাবে প্রজনন করে।

খালি পায়ে হাঁটলে, অপরিষ্কার পরিবেশে থাকলে কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়াও, সঠিকভাবে না ধুয়ে ফল এবং শাকসবজি খেলে কৃমি সংক্রমিত হতে পারে।

কোন খাবারের সাথে কৃমির সম্পর্ক আছে কি ?

বেশি মিষ্টি, কলা কিংবা মাছ খাওয়ালে পেটে কৃমি হয় এমন একটা ধারণার অনেকের মাঝে আছে। বিভিন্ন এলাকায় আরো কিছু খাবারের নামও অনেকে বলেন যা খেলে পেটে কৃমি হয় । আসলে মানুষের মল থেকে কৃমির সংক্রমণ হয়।

কৃমির ডিম বা লার্ভা মানুষের মলে নির্গত হয়। পরে অপরিষ্কার হাত, আঙুলের নখ বা অপরিষ্কার শাকসবজি, ফল ইত্যাদির মাধ্যমে কৃমির ডিম মুখে প্রবেশ করে। তবে অপরিষ্কার খাবারের সঙ্গে কৃমির সম্পর্ক রয়েছে। যেমন বাজারে খোলা চকোলেট, লজেঞ্জ বা মিষ্টি ইত্যাদি। এই খাবারগুলি মাছি দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং এইভাবে কৃমির ডিম বা লার্ভা অপরিশোধিত খাবারের সাথে শরীরে প্রবেশ করে।

আমাদের আরও পোস্ট পড়ুনঃ কিভাবে ওজন কমানো যায়

কিভাবে কৃমি দূর করা যায়

আমরা ইতিমধ্যে জনেছি যে কৃমি একটি খুব ছোট জিনিস কিন্তু এটি আমাদের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তাই কৃমির সমস্যা থেকে বাঁচতে আমাদের অবশ্যই কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে।

কৃমি দূর করার উপায়

১। নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ পরিহার করতে হবে।

২। বাইরে হাটতে গেলে স্যান্ডেল বা জুতা ব্যবহার করতে হবে।

৩। খাবার ভালো করে ধুয়ে খেতে হবে।

৪। ফল ও সবজি ভালো করে ধুয়ে রান্না করে খেতে হবে।

৫। নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

৬। টয়লেট ব্যবহারের পর হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে।

৭। নিয়মিত হাত ও পায়ের নখ কাটতে হবে।

৮। শরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

৯। নিরাপদ পানি পান করতে হবে।

বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার কারন কি?

কৃমি হলে মলদ্বার চুলকায় বলে শিশুরা বার বার সেখানে হাত দেয়। পরে আবার সেই হাত মুখে দেয়। এভাবেই জিবানু ছড়াতে থাকে। তবে মলদ্বার চুলকানো মানেই কৃমি সংক্রমণ এমনটা নাও হতে পারে। কৃমি সংক্রমণের আরও উপসর্গ আছে। যেমন: রক্তশূন্যতা, ওজন না বাড়া, পেট ফাঁপা, আমাশয়, অপুষ্টি, পেট কামড়ানো, ইত্যাদি।

খাওয়ার আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পরে বাচ্চাদের নিয়মিত সাবান দিয়ে ভালভাবে হাত ধোয় শেখান। বাইরের নোংরা খাবার না খাওয়াই ভালো। বাচ্চাদের খালি পায়ে মাঠে খেলতে দেবেন না।

কেবল গ্রামে বা রাস্তায় থাকা শিশুদের কৃমি হয় এই ধারণাও ভুল। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে কেউ কৃমির সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই অপুষ্টি এড়াতে নিয়মিত কৃমিনাশক খাওয়া ভালো।

কৃমির সমস্যা কেন হয়?

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. অপূর্ব ঘোষ বলেন, সাধারণত মলমূত্র ও নখের ময়লার মাধ্যমে কৃমি শিশুর পেটে ছড়ায়। তিনি আরও বলেন, শিশুরা খেলার সময় মুখে হাত দেয় এমনকি মুখে খেলনাও ফেলে দেয়।

বাইরে হাঁটলে কৃমি শরীরে প্রবেশ করতে পারে। কৃমির সংক্রমণও শুরু হয় যখন শিশুরা হামাগুড়ি দিতে শুরু করে বা হাঁটতে শেখে। তাই বাচ্চা মাটিতে থাকার সময় কড়া নজর রাখুন।

আমাদের আরও পোস্ট পড়ুনঃ

কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার আগে না পরে খেতে হয়?

মনে রাখবেন কৃমির ট্যাবলেট ভরা পেটে খাওয়া ভালো। কৃমির ট্যাবলেট রাতে খাওয়ার আধা ঘন্টা পরে খাওয়া উওম হয়। অর্থাৎ এটি সাধারণত রাতে খাবার খাওয়ার পর খেতে হয়। আপনি যদি বিবাহিত হন কারো সাথে বিছানা ভাগাভাগি করে থাকেন, তবে উভয়েরই কৃমির ট্যাবলেট খাওয়া উচিত।

কৃমির ওষুধ সম্পর্কে ভুল ধারণা

কৃমির ওষুধ নিয়ে প্রচলিত অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন গরমে কৃমির ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। গরমে কৃমির ট্যাবলেট খেলে কোনো সমস্যা নেই।

তাছাড়া গ্রামাঞ্চলের অনেকেই মনে করেন গরমে কৃমির ওষুধ খেলে শরীর ফুলে যায়। এটাও একটা ভুল ধারণা। আসলে কৃমির ওষুধের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

গরম কালে কৃমিনাশক খাওয়া যাবে না এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। গরম, ঠাণ্ডা, বর্ষাকালে যে কোনো সময় কৃমিনাশক খাওয়া যেতে পারে। তবে খাওয়ার পর বা ভরা পেটে খাওয়া ভালো।

আর কৃমিনাশক একটি নিরাপদ ওষুধ। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। যাইহোক, কিছু মানুষের পেট ফোলা বা বমি বমি ভাব হতে পারে। কৃমিনাশক সেবনে শিশুরা অসুস্থ হওয়ার খবরের বেশিরভাগই অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের কারণে।

বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। সবজি ও মাংস খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। খাবার তৈরি ও পরিবেশনের আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

বাচ্চাদের কৃমির লক্ষণ

শিশুদের মধ্যে কৃমির সংক্রমণ খুবই সাধারণ। তবে কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন শিশুর পেটে কৃমি হয়েছে।

অনেক সময় দেখা যায় শিশুর মেজাজ ভালো থাকে না। এবং তার মলদ্বারে জ্বালা সহ বমি, মাঝে মাঝে পেটে ব্যথা। শিশুদের ক্ষেত্রে এসব সমস্যা দেখা দিলে অনেক অভিভাবক মনে করেন সন্তানের পেটের সমস্যা আছে। জেনে রাখা ভালো যে এই সমস্যাগুলো পেটে কৃমির লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু

বাচ্চাদের কৃমির লক্ষণ
বাচ্চাদের কৃমির লক্ষণ

আপনাকে কৃমি, তাদের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে জানতে হবে।

শিশুর কৃমির ৫টি লক্ষণ

সাধারণত শিশুদের মধ্যে কৃমি সংক্রমণের কোনো লক্ষণ থাকে না। তবে শিশুর আচরণে কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটতে পারে।

চলুন দেখে নেওয়া যাক বাচ্চা কৃমির কিছু লক্ষণ-

১. ঘন ঘন পেটে ব্যথা এবং ক্ষুধা হ্রাস।

২. খাবার খেয়ে পেটে ব্যথা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৩. অনেক শিশু আবার থুথু ফেলে বা অযথা থুতু ফেলে।

৪. কামড় দেয়, খিমচে দেয় কৃমির উপদ্রব বাড়লেও এ ধরনের লক্ষণ দেখা যায়।

৫. অনেক সময় মল দিয়েও কৃমি বের হয়। তাই শিশুর মলের দিকে নজর রাখতে হবে।

শিশুর মলপরীক্ষা করে দেখা যায়

শিশুর পেটে কৃমি হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য স্টুল এগজ়ামিনেশনও করানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এক দিনে নয়, পরপর তিন দিন মল পরীক্ষা করাতে হবে। তাতে কৃমি বেরোলে নিশ্চিত হতে পারবেন। তবে অনেক সময়ে এই পরীক্ষাতেও কৃমি ধরা পড়ে না। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নিন। প্রয়োজনে ওষুধ দিন।

শিশুর কৃমির চিকিৎসা

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. চয়ন গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ৩ বছর বয়স থেকে ৬ মাস পর পর শিশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে। ১২ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত এই ওষুধ খাওয়ানো যায়। এ ছাড়া জরুরি হল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। কৃমির সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাও জরুরি।

বাচ্চাদের কৃমি থেকে বাচাতে যে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে

১. সন্তানের খাবার, পানি , এমনকি ন্যাপি বদলানোর আগেও হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারও ব্যবহার করতে পারেন।

২. শিশুটি বাইরে থেকে খেলে বা ঘুরে এলে অবশ্যই ভাল করে সাবান দিয়ে তার হাত-পা ধুয়ে দিন।

৩. শিশুর নখ পরিষ্কার রাখতে হবে ও নিয়মিত নখ কাটতে হবে। খেয়াল রাখুন, সে যেন নখ না খায়। নখের কোণে যে ময়লা জমে, তার থেকেও কিন্তু কৃমি প্রবেশ করতে পারে শরীরে।

৪. ফল, আনাজপাতিও বাজার থেকে এনে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরে খেতে হবে।

ফিতা কৃমি কোথায় বাসা বাঁধে ?

ফিতা কৃমি কি?

ফিতা কৃমি একপ্রকার চ্যাপ্টাকৃতি কৃমি যা প্রাণীর (মানুষ, পশুদের) পেটের ভিতরে থাকে। যে কোন উৎসের মাধ্যমে মানব শরীরে ফিতাকৃমি প্রবেশ

ফিতা কৃমি কোথায় বাসা বাঁধে ?
ফিতা কৃমি

করে, তখন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে ফিতাক্রিমির সংক্রমণ ঘটে।

একজন ব্যক্তি ফিতা কৃমির ডিম এবং লার্ভা দ্বারাও সংক্রামিত হতে পারে।

ফিতা কৃমির প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গ কি কি?

বমি বমি ভাব এবং বমি ফিতা কৃমি সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণগুলির সাথে যুক্ত। জ্বরের সাথে দুর্বলতা, ক্লান্তি এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ থাকতে পারে।

ব্যক্তির ক্ষুধা কমে যেতে পারে। আবার উল্টো, চরম ক্ষুধার অনুভূতি (স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি) হতে পারে।
কৃমি শরীরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে গেলে মাথাব্যথা এবং খিঁচুনি-এর মতো গুরুতর স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

ফিতা কৃমি অ্যালার্জেনের বিস্তারের ফলে রোগীর শরীরে অ্যালার্জি এবং ফুসকুড়ি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

ফিতা কৃমির প্রধান কারণ কী?

১। সংক্রামিত গরু বা শূকরের মাংসর মতো উৎস থেকে ফিতাকৃমি মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সূত্র জানা যায়, ছয় ধরনের ফিতাকৃমি মানবদেহে সংক্রমণ ছড়ায়।

২। সংক্রামিত পশুর মাংস কাঁচা বা ভুলভাবে রান্না করা বা দূষিত পানি পান করা একজন ব্যক্তিকে সংক্রমিত করতে পারে।

৩। একজন সংক্রামিত ব্যক্তির তৈরি খাবার অন্য ব্যক্তির খাওয়ার মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

৪। সঠিক স্বাস্থ্যবিধির অভাব যেমন খাবার খাওয়ার আগে ভালভাবে হাত না ধোয়া এবং নোংরা হাতে রান্না করা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

ফিতা কৃমি কিভাবে  নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?

১। কেউ যদি ফিতা কৃমি সংক্রমণের লক্ষণগুলি অনুভব করেন তবে কৃমি এবং এর ডিম খুঁজে পেতে মলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

২। কিছু ক্ষেত্রে, নমুনা থেকে কৃমি অনুপস্থিত থাকলেও সংক্রমণ হতে পারে, তাই অনেক মলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

৩। তলপেটে ফোলা বা সিস্টের সম্ভাবনা থাকলে তা নির্ণয়ের জন্য বিশেষত সিটি স্ক্যান, এমআরআই বা অ্যালট্রাসাউনডের ব্যবহার করা হয়।

৪। শরীরে সংক্রমণ এবং ফিতা কৃমির বিরুদ্ধে কোনো অ্যান্টিবডি আছে কি নেই তা নিশ্চিত করার জন্য রক্ত ​​পরীক্ষা করা হয়।

৫। কিছু ক্ষেত্রে, শরীরে ফিতাকৃমি থাকা সত্ত্বেও লক্ষণগুলি ব্যক্তির মধ্যে নাও থাকতে পারে।

৬। সংক্রমণের জন্য উপযুক্ত ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। ওষুধের কোর্স সম্পূর্ণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৭। এ ক্ষেত্রে ব্যথা বা ফোলা হলে প্রদাহরোধী ওষুধের পাশাপাশি কৃমি ও তাদের ডিম ধ্বংস করার জন্য হেলমিন্থিক কিলার অ্যালবেন্ডাজল জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়।

৮। গুরুতর ক্ষেত্রে, লিভার এবং ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণের জন্য সেগুলি বাতিল করার জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।

৯। প্রতিটি রোগীর তাদের নিজস্ব স্বাস্থ্যবিধি যত্ন নেওয়া উচিত এবং পুনরায় সংক্রমণ এড়াতে একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করা উচিত।

সাধারণত কত মাস পর পর কৃমির ট্যাবলেট খেতে হয়?

প্রতি তিন মাস পরপর পরিবারের সবাই সেবন করতে পারেন। সুস্থ মানুষ বা শিশুরা চার থেকে পাঁচ মাস অন্তর কৃমির ওষুধ সেবন করলে ক্ষতি নেই। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদেরও কৃমির ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে, তবে শিশুদের খাওয়ানোর পূর্বে প্রথমে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

পেটে কৃমি হলে কি হয়?

কৃমির কারনে মানুষের শরীরে কি কি সমস্যা হতে পারে তা দেখুন:
১। বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
২। রক্তাল্পতা
৩। দুর্বল লাগছে
৪। পেটে ব্যথা
৫। ডায়রিয়া
৬। নার্ভাস ক্ষুধাহীনতা
৭। ওজন কমানো
৮। পেট ফাঁপা
৯। বদহজম
১০। ক্ষুদ্রান্ত্রকে বন্ধ করে দেওয়া
১১। অন্ত্রনালিকে ছিদ্র করা
১২। জন্ডিস

কৃমি খাওয়ার আগে নাকি পরে

কৃমির ট্যাবলেট ভরা পেটে খাওয়া ভালো। কৃমির ট্যাবলেট রাতে খাওয়ার আধা ঘন্টা পরে খাওয়া উওম হয়। অর্থাৎ এটি সাধারণত রাতে খাবার খাওয়ার পর খেতে হয়।

Sharing Is Caring:

আমি জিয়ারুল কবির লিটন, একজন বহুমুখী ব্লগার, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, জীবনধারা এবং ইসলামিক বিষয় সহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখির প্রতি অনুরাগী। আমি কঠোর অন্বেষণ, অনুসন্ধান, তত্ত্বানুসন্ধান ও অনলাইনের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে আমার আকর্ষক লেখার এবং অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ২০১৫ সাল থেকে ব্লগের মাধ্যমে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং ইতিবাচকতা দিক গুলো নির্ভুল ভাবে সবার সাথে ভাগ করে চলার চেষ্ট করছি।

2 thoughts on “কৃমির ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম”

Leave a Comment